‘এই মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না’ বলার পরই শুরু সংঘর্ষ
'এ মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না'—গ্রামের একজন মসজিদে দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্য করার সঙ্গে সঙ্গেই দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ।
আজ শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এমই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে।
সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার পাশাপাশি মসজিদের দরজা-জানালা এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা মাওলানা মহিউদ্দিন ইমামতি করেন। ইশা ও তারাবিহ নামাজ শেষে মসজিদের মুসল্লি একই গ্রামের 'কিচকি' বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান ইমামের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু মাসাআলা নিয়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না।
এরপরই উপস্থিত মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করে। এতে দুই গোষ্ঠীর মুসল্লিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে উভয়পক্ষ মসজিদ থেকে বের হয়েই দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন বলেন, 'তারাবিহ নামাজ শেষে কিচকি বাড়ির শফিকুর রহমান আমার কাছে অনুমতি চেয়ে মসজিদে বক্তৃতা করার সময় এ মসজিদের কোনো মুসল্লিরই নামাজ হয় না বলে মন্তব্য করে বসেন। এ নিয়ে বেধে যায় হট্টগোল। এরই মধ্যে শফিকুর রহমানের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মোল্লা বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা করে। এতে মোল্লা বাড়ির পাঁচ-ছয়জন গুরুতর আহত হন।'
শফিকুর রহমানের দাবি, তিনি ইমামের অনুমতি নিয়ে নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সেজদা ও দাঁড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া ও কাতার সোজা করার গুরুত্ব বিষয়ে সতর্ক করতে ইমামকে অনুরোধ করেন। এতে ইমাম ও মোল্লা বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভেতরেই তাকে নাজেহাল করেন। পরে তারা শফিকুর ও তার এক ভাইয়ের দালান ঘরে হামলা চালায় এবং তার একটি গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় কিচকি বাড়ির অন্তত সাত-আটজন গুরুতর আহত হন।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, 'খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments