ইট ভাটার আগুনে পুড়ে গেছে ২০০ কৃষকের ধান

ইট ভাটার আগুনে পুড়ে গেছে কৃষকের ধান। ছবি: স্টার

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ইট ভাটার আগুনে পুড়ে গেছে ২০০ কৃষকের ধান। এতে পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

উপজেলার ফেটালিয়া গ্রামের আফসর উদ্দিন ছেলে কৃষক সাদির বলেন, 'আমার ১ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বলছে ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু এখনো যোগাযোগ করেনি।'

স্থানীয়রা জানায়, কাপাসিয়ার তারাগঞ্জের ফেটালিয়া গ্রামে ২০১২ সালে একটি অবৈধ ইট ভাটা স্থাপন করা হয়। এটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আগে 'ফেটালিয়া ব্রিক ফিল্ড', 'ভাই ভাই ব্রিক ফিল্ড' নামে চালু থাকলেও বর্তমানে এটি এসকেএস নামে চালু আছে।

ওই ইটভাটার ২০০ ফিট দূরত্বের মধ্যে স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় গ্রামের গাছগাছালিতেও কোনো ফুল-ফল থাকে না৷ সবকিছু অকালেই ঝড়ে যায়। ওই ইটভাটার কারণে ফসলের মাঠ কালো ধোঁয়া ও তাপে পুড়ে গেছে। 

ফেটালিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য মঞ্জুর হোসেন বলেন, 'দুই শতাধিক কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের মাথায় যেন বাজ পড়েছে। ক্ষতিপূরণ পেতে কৃষকেরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পাবে কি না এখনও বলা যাচ্ছে না।'

কৃষি ব্লক সুপারভাইজার মঞ্জুরুল আমিন বলেন, 'কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত ফসল পরিদর্শন করেছি। অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। যেসব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাদের তালিকা করে উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে জমা দিয়েছি।'

এ বছর ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষক বুরুজ মিয়া। কিন্তু ধানে দুধ আসার পরপরই ভাটার তাপে সেই ধান পুড় গেছে। তিনি বলেন, 'আমি ধার দেনা করে জমি চাষ করেছি। কিন্তু কীভাবে সেই ধার শোধ করব তা বুঝতে পারছি না।'

একই কথা জানান কৃষক আব্দুল হাই। তিনি বলেন, 'আমি ও আমার ভাই আনোয়ার মিলে ৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু ভাটায় ধোঁয়া সব ধান পুড়ে গেছে।'

কৃষক আব্দুল বাতেনের ছেলে আবুল কাসেম  বলেন, 'আমার বাবা একজন  বর্গা চাষী। জমিতে কাজ করতে গিয়ে ভাটার ধোঁয়ায় তার বাবার তীব্র শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা দেয়। বাবাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছি।'

ক্ষতিপূরণ পেতে কৃষকদের আবেদন করতে বলা হলেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না তারা।

জানতে চাইলে ইট ভাটার মালিক রমিজ উদ্দিন রমি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগুনের তাপে কিছু কৃষকের ধানে ফুল আসার সময় নষ্ট হয়েছে। কৃষকরাই ভাটার আগুন গেইটে তালা মেরে দিয়েছে।'

কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'জানি না। আপাতত ভাটা বন্ধ আছে। আমি এখনো লাইসেন্স করতে পারিনি।'

Comments

The Daily Star  | English

No scope to verify authenticity when cases are filed: IGP

Instructions have already been issued to ensure that no one is arrested in a harassing manner, he says

20m ago