সংলাপের মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ-উত্তেজনা নিরসন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে 'না' বলার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের 'শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা' সমর্থন করে বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের অবশ্যই সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে "না" বলতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রের এসকাপ হলে (তৃতীয় তলা) জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

৬ দিনের সরকারি সফরে বুধবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে পৌঁছান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা।

তিনি বলেন, 'আমাদের অবশ্যই সংলাপের মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিরসন করতে হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা অবশ্যই সর্বাগ্রে থাকতে হবে।'

শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট অবসানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশেষ করে আসিয়ানকে তাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যা ছাড়া আঞ্চলিক যোগাযোগ, সংহতকরণ ও সমৃদ্ধির সব প্রচেষ্টা একটি অনুপস্থিত ধাঁধা দ্বারা চিহ্নিত করা অব্যাহত থাকবে।

তিনি উল্লেখ করেন, তাদের সংকটের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত এই সমাধান নাগালের বাইরে থাকবে, ততক্ষণ আঞ্চলিক সংযোগ, সংহতি ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের সব প্রচেষ্টা একটি অনুপস্থিত ধাঁধা দ্বারা চিহ্নিত হতে থাকবে। আসুন আমরা সেই ধাঁধাটিকে আবার জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করি।'

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে পালিয়ে এলে বাংলাদেশ তাদের সাময়িক আশ্রয়ের প্রস্তাব দেয়।

তিনি আরও বলেন, 'ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যায় যা এখন বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও বিলম্বিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'যা আমাদের ভূখণ্ডের ভেতরে ও বাইরে গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে।'

তিনি মিয়ানমারের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমাধানে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিশেষ করে আসিয়ানকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে দ্রুততম সময়ে দেশে ফিরে যেতে পারে, তা আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবশ্যই দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অভিন্ন শত্রুদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০০৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক সাত শতাংশে নামিয়ে এনেছে। একই সময়ে চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক এক শতাংশ থেকে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, '২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে আমরা প্রত্যয়ী।'

তিনি উল্লেখ করেন, মাতৃ ও শিশু পুষ্টির ওপর গুরুত্বারোপের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, 'আমাদের বর্তমান অগ্রাধিকার হলো আয় বণ্টন, সম্পদের মালিকানা ও সামাজিক সুরক্ষার মাধ্যমে বৈষম্য দূর করা।'

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago