গরুর দাম এখনো চড়া

ছবি: স্টার

ক্রেতা কম থাকায় কোরবানির পশুর দাম কিছুটা কমে এলেও গত বছরের তুলনায় তাম এখনো অনেক বেশি।

কোরবানির ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি। কিন্তু, ঢাকার হাটগুলোতে প্রচুর গরুর সরবরাহ থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা বেশ কম।

ধারণা করা হচ্ছে, মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের ওপর উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপের কারণেই এবার ঢাকার পশু হাটগুলোতে ক্রেতা কম।

২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার নয় দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।

তবে অনেক ব্যবসায়ী আশাবাদী যে শনিবার রাত ও রোববার ক্রেতা বাড়বে।

ওয়ারীর বাসিন্দা নাফিউর রহমান আসিফ বলেন, '৯২ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছি। ব্যাপারীরা দাম কমাতে চায় না। যার কারণে হাটে গরুর দাম এখনো বেশি।'

মালিবাগের বাসিন্দা মো. সাকিব হোসেন বলেন, 'সাড়ে নয় লাখ টাকায় তিনটি ষাঁড় কিনেছি। গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি দিতে হলো।'

ক্রেতা কম থাকায় দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে তারাও অসন্তুষ্ট। তাদের ভাষ্য, পশুখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গবাদি পশু পালনে খরচ অনেক বেশি।

নাটোর থেকে কমলাপুর গরুর হাটে আসা আবুল কাশেম শেখ বলেন, 'আমি ২৮টি বড় গরুর মধ্যে ছয়টি বিক্রি করেছি। সবগুলোই লোকসানে বিক্রি করতে হলো। কী করব বলেন, কেনার লোকই তো নেই।'

মানিকগঞ্জ থেকে ২৪টি ষাঁড় নিয়ে গাবতলি এসেছেন ব্যবসায়ী রশিদ মোল্লা। তিনি জানান, কিছু লোকসান দিয়ে ছয়টি ষাঁড় ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।

তিনি বলেন, 'শেষ দিনেও যদি বিক্রি না হয়, তাহলে আরও বেশি লোকসান হয়ে যাবে। তাই লাভের কথা না ভেবে যে দাম পাচ্ছি, বিক্রি করে দিচ্ছি।'

ঢাকার অনেক বাসিন্দাই এ বছর কোরবানি দিচ্ছেন না। ইব্রাহিমপুরের বেসরকারি চাকরিজীবী রুহুল আমিনও তাদের মধ্যে একজন। ঈদের দিনের জন্য তিনি কয়েক কেজি গরুর মাংস কিনেছেন।

রুহুল আমিন বলেন, 'এই বছর কোরবানি দিতে পারছি না। ঈদ বোনাস পেয়েছি ৩০ হাজার টাকা। প্রতি মাসের খরচে যে টানাটানি থাকে সেটা মেটাতেই এই টাকা শেষ হয়ে যাবে।'

ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজের একজন শিক্ষকের অবস্থাও রুহুল আমিনের মতোই। গত বছর ৪৭ হাজার টাকায় একজনের সঙ্গে ভাগে কোরবানি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার প্রয়োজনীয় অর্থের সংকুলান করতে না পারায় কোরবানি দিচ্ছেন না।

গাবতলি হাটে পাকিস্তান থেকে দুটি উট ও পাঁচটি দুম্বা নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন। তিনি একটি উট ২৩ লাখ টাকায় এবং দুটি দুম্বা দুই লাখ টাকা করে বিক্রি করেছেন।

তিনি বলেন, 'উটের দাম চেয়েছি ২৬ লাখ টাকা। আমার কাছে দুটি দুম্বা আছে, যেগুলোর দাম দুই লাখ টাকা করে। আর বড়টার দাম চার লাখ টাকা।'

উড়োজাহাজে করে এসব উট ও দুম্বা বাংলাদেশে আনতে ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়ে বলে দাবি করেন আমজাদ।

গাবতলি গরুর হাটে ৩৮ মণ ওজনের একটি ষাঁড়ের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা।

ষাঁড়টির মালিক বলেন, 'এর পেছনে সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ক্রেতা কম থাকায় নামমাত্র লাভ হলেও এটা বিক্রি করে দিবো।'

Comments

The Daily Star  | English

US enters Israel-Iran war. Here are 3 scenarios for what might happen next

Now that Trump has taken the significant step of entering the US in yet another Middle East war, where could things go from here?

1h ago