ভারী যান চলাচলে ঝুঁকিতে তিস্তা সেতু

তিস্তা নদীর ওপর শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুতে ভারী যানবাহ চলাচলের কারণে সেতুর কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

অতিরিক্ত পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে তিস্তা নদীর ওপর শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু ও এর সংযোগ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

দুই মাস আগেও কাকিনা-মহিপুর সড়কে তিস্তা সেতু ও সেতুর উভয় পাশে ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের ওপর তিনটি ব্যারিয়ার পোস্ট ছিল যাতে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে।

তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ সেগুলো তুলে দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত করে দেয়। এতে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে আসা পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো এই সেতুর ওপর দিয়ে রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল শুরু করে। প্রত্যেকটি ট্রাকে ৩৫-৫০ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে যাওয়া হয়। এ কারণে সেতুর ওপর কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে এবং বিভিন্ন অংশে সংযোগ সড়ক দেবে যেতে শুরু করেছে।

স্থানীয় লোকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলে, প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে।

কাকিনা-মহিপুর রুটে তিস্তা সেতু রুটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লালমনিরহাট জেলার চারটি উপজেলার মানুষজন ও বুড়িমারী স্থলবন্দরে আসা ব্যবসায়ীরা এই রুট ব্যবহার করে দ্রুত রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন এই সেতুর ওপর ১০ হাজারের বেশি হালকা যান চলাচল করে। দুই মাস ধরে ভারী যান চলাচলের কারণে সেতু ও সংযোগ সড়ক ঝুঁকিতে পড়েছে।

 এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রায় ১৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর ওপর শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু নির্মাণ করা হয় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর এলাকায়। এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৮৫০ মিটার। এটিকে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু বলা হয়। ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সেতুটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংযোগ সড়ক মজবুত ও প্রশস্তকরণসহ আনুষঙ্গিক কাজ করতে চলতি বছর ২২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়।

মহিপুর এলাকার ব্যবসায়ী শামসুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও ব্যবসায়ীরা এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে সড়কের ওপর ব্যারিয়ার পোস্ট তুলে দেন। এরপর থেকে পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচল শুরু করেছে। এসব পাথরবোঝাই ট্রাক আরও কিছুদিন চলাচল করলে সংযোগ সড়ক নষ্ট করে দেবে এবং সেতুটিতে ঝুঁকিতে ফেলবে।

ট্রাকচালক নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সেতুর ওপর চলাচল করলে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব কম হয়। এতে জ্বালানি খরচ ও সময় সাশ্রয় হয়। এছাড়া শেখ হাসিনা সেতুর ওপর দিয়ে চলতে কোনো টোল দিতে হয় না। লালমনিরহাট শহর দিয়ে ঘুরে রংপুরে গেলে খরচ ও সময় বেশি লাগে। তিস্তা সড়ক সেতুতে টোল দিতে হয়।'

রংপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সেতু ও মূল সংযোগ সড়কের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে কোনো সমস্যা নেই। পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো প্রায় ৩৫-৫০ টনের। এই ওভারলোড স্থাপনার জন্য ক্ষতিকারক। সেতুর ওপর কার্পেটিং উঠে গেছে। সংযোগ সড়কের শোল্ডার অংশ দেবে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, 'সেতুর ওপর কার্পেটিং সংস্কার করার প্রস্তুতি নিয়েছি।'

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সভা হয়েছে। খুব দ্রুত কাকিনা-মহিপুর সড়করে ওপর ব্যারিয়ার পোস্ট নির্মাণ করে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

6h ago