‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরত দিন’

ছবি: আবু তালহা/স্টার

'রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরত দিন'—রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংলগ্ন আড়ং সিগনালে এমন লেখাসম্বলিত পোস্টার হাতে দাঁড়িয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।

আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় দেখা যায়, তাদের সামনে একটি টেবিল রাখা আছে এবং সেখানে দুয়েকজন কিছু জিনিস ফেরতও দিয়ে গেছেন।

গণআন্দোলনের মুখে গতকাল সোমবার দুপুরে টানা চতুর্থবারের মতো সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং দেশত্যাগ করেন। এর পরেই বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করে এবং রাষ্ট্রীয় জিনিসপত্র ও আসবাব লুট করে নিয়ে যায়।

ফেরত দেওয়া জিনিস। ছবি: আবু তালহা/স্টার

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ভারী আসবাব, দেয়াল ঘড়ি, গণভবনের হাঁস-মুরগি থেকে শুরু করে 'গণভবন' লেখা সাইনবোর্ড পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছেন তারা। প্রায় একই সময়ে জাতীয় সংসদ ভবনেও চলে লুটপাট।

শিক্ষার্থীরা সেসব জিনিসপত্র ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে।

ওই শিক্ষার্থীদের একজন তেজগাঁও কলেজের মনোবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী উম্মে হাবিবা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গণভবন-সংসদ ভবন থেকে যারা বিভিন্ন জিনিস নিয়ে গেছেন, সেগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ। সেগুলো যাতে তারা ফেরত দিতে পারেন, সেজন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা যেগুলো পাব, সেগুলো সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।'

তিনি জানান, দুপুর ১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চারজন এসে গতকাল নেওয়া বিভিন্ন জিনিস ফেরত দিয়ে গেছেন। এর মধ্যে এক দম্পতি গণভবন থেকে নেওয়া তবলা-ডুগি ফেরত দেন। এ ছাড়া বাকিরা একটি টেলিফোন, দুইটি বই ও কিছু সরকারি নথিপত্র ফেরত দিয়ে গেছেন।

আড়ং সিগনালে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আবু তালহা/স্টার

এদিন সকাল থেকে দুপুর ১২টার পরও সংসদ ভবনে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বের হয়ে যেতে অনুরোধ করেন। এরপর তারা দক্ষিণ প্লাজাসহ সংসদ প্রাঙ্গণ ঝাড়ু দেন।

বিকেলে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে 'উৎসুক জনতার' ভিড় আরও বাড়লে শিক্ষার্থীরা সংসদ ভবনের দুই গেটে মানববন্ধন করে দাঁড়ান, যাতে আরও কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। এ ছাড়া, কারওয়ান বাজার মোড়, খামার বাড়ি থেকে আড়ং সিগনাল ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এসব জায়গায় শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছেন সাধারণ মানুষও।

মোহাম্মদপুরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আবু তালহা/স্টার

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের বিএনসিসি কমান্ডার নাঈম ও বিএনসিসি সদস্য অভির সঙ্গে। তারা জানান, দুপুরের পর থেকে যানবাহন চলাচল বাড়তে থাকায় যানজট সৃষ্টি হতে শুরু করে। সেজন্য তারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

খামারবাড়ি থেকে আড়ং সিগনাল ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের প্রায় ৫০ শিক্ষার্থীকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

7h ago