লুটপাট-অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে রাত জেগে পাহারায় শিক্ষার্থীরা
নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীতে ধারাবাহিক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ডাকাতি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
চলমান সহিংসতা কমিয়ে আনতে তারা হাতে লাঠি, টর্চ লাইটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে গত দুই দিন ধরে এলাকায় কাজ করছেন। স্থলপথের পাশাপাশি জলপথেও স্পিডবোট নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এ দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকায় এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর একযোগে আলোকবালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দুর্বৃত্তরা হামলা চালাচ্ছে, লুটপাট করছে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে, পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামে হামলা অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে তারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
আলোকবালী ইউনিয়নের কাজিরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও কাজিরকান্দি ফুলকুড়ি একাডেমির শিক্ষক নাসির আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোটা আন্দোলন সফল হওয়ার পর এই সফলতাকে পুঁজি করে এলাকার কিছু লোক হামলা, ভাঙচুর, মারধর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে আমরা রাতে বিভিন্ন গ্রাম, পাড়া ও মহল্লায় দায়িত্ব পালন করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'রাতে আমরা যখন মুরাদনগর গ্রামে পাহারা দিচ্ছিলাম, তখন খবর পেলাম বকশালীপুরে লুটপাট শুরু হয়েছে। খবর পাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমাদের দল স্পিডবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।'
এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আহমেদ ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোটা আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকার হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল বৈষম্যবিরোধী সমাজ গঠন। কিন্তু আমাদের প্রাথমিক বিজয়ের পর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকা একদল দুর্বৃত্ত সেটাকে পুঁজি করে বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট অব্যাহত রেখেছে। তাই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি মানুষকে দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিতে। এখন এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জীবন উৎসর্গ করতেও আমাদের আপত্তি নেই। আমরা মানুষের পাশে আছি, যেকোনো দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত আছি।'
Comments