পুলিশকে কাজে ফিরতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা
এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশকে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ রোববার সচিবালয়ে তিনি বলেন, 'পুলিশের ফোর্স এখনো জয়েন করেনি। তাদের জন্য শেষ তারিখ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। আপনারা যদি বৃহস্পতিবারের মধ্যে কেউ না আসেন, আমরা ধরে নেব আপনারা চাকরিতে আসতে ইচ্ছুক নন।'

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, 'এই বৃহস্পতিবারের মধ্যে যে যার জায়গায় চলে যাবেন, ডিউটিতে থাকবেন। যা হয়ে গেছে, অহেতুক কেউ কারও গায়ে হাত তুলবেন না। বিচার করার প্রক্রিয়া আমরা করব। বিচার বিভাগ বিচার করবে।

'যারা দোষী হবেন, বড় দোষী, ছোট দোষী যেই হোক, তাদের পানিশমেন্ট হবে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না।'

এর আগে পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'পুলিশের ম্যোরাল অনেক ডাউন। চেষ্টা করছি যাতে পুলিশ ফিরে আসে। পুলিশ ফিরে না আসলে আপনারা দেখছেন যে কী হতে পারে। একটু আগে দেখলাম ব্যাংকের মধ্যেও মারামারি। ব্যাংক দখল করবে কে কার আগে।'

পুলিশের গায়ে হাত না ওঠানোর আহ্বান জানিয়ে সাধারণ জনগণের উদ্দ্যেশ্যে তিনি বলেন, 'আপনারা পুলিশের গায়ে হাত ওঠাবেন না। আপনারা এখন দেখছেন যে, (পুলিশ ছাড়া) আপনারা নিজেরাই সাফার করছেন। রাতে আমার কাছে টেলিফোন আসে অমুক জায়গায় ডাকাতি হয়েছে। আমি বলি যে, আল্লাহ আল্লাহ করো, আর কিছু করার নেই। কী করার আছে সেখানে যদি পুলিশ না থাকে।'

এছাড়া চাকরি স্থায়ীকরণের এক দফা দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ করা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের তিনি বলেন, 'সবার দাবি-দাওয়া আছে। আমারও আছে। আমার দাবি-দাওয়া হলো আপনারা ফিরে যান। আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে আপনাদের কথা দিচ্ছি। এটা আমার দায়িত্ব যে আপনাদের কাছে আসা, আপনাদের কথা শোনা। যতদূর সম্ভব আমার পক্ষে ইমিডিয়েট যা করার করব।'

তিনি বলেন, 'অন্য কোনো ইমপ্লিমেন্টেশন যদি থাকে, অন্য মন্ত্রণালয় থাকে, আমরা আলোচনা করে করব। আপনারা দয়া করে রাস্তাটা ছেড়ে দেন, রাস্তা থেকে চলে যান।…অন্যান্য ফোর্স বা অন্যান্য বাহিনী যারা আছে, প্রত্যেক বাহিনীর সঙ্গে আমি কথা বলব। আপনারা সবাই আমার পরিচিত। আপনাদের কমান্ডাররা আমার পরিচিত। আমি কোনো স্ট্রেইঞ্জ লোক না, আমি কোনো পলিটিশিয়ান না। আমি যা বলব তাই করব, তাই করার চেষ্টা করব।'

তীব্র গণ আন্দোলনে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'এতবড় একটা দল, এত ঐতিহ্যবাহী একটা দল, যার নামের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা জড়িত, আজকে তাদের মেম্বারদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তাদের জায়গায় যদি আপনি মনে করেন, আমি আসলাম দখল করব, বাজার দখল করব, ঘাট দখল করব, এটা দখল করব, চাঁদাবাজি করব—কিছুদিন করেন। কিন্তু আমি সেনাপ্রধানকে বলেছি, রিকোয়েস্ট করেছি, পা ভেঙে দিতে আপনাদের। আই ডেন্ট কেয়ার, ইউ গো টু হেল। চাঁদাবাজি করবেন, আমি শুনেছি কারওয়ান বাজারে গিয়ে চাঁদাবাজি করেন, কিছুক্ষণ আগে শুনেছি একটি ব্যাংকের মধ্যে দখল নেওয়ার জন্য মারামারি হয়েছে। কিছুটা পিরিয়ড এখন আছে, চাঁদাবাজি করেন। কিন্তু আমার কানে আসলে ভালো হবে না। আমি পাবলিকও না, আমি পলিটিশিয়ানও না। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে ফৌজি মানুষ, যা বলব তাই করব।'

চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'চাঁদাবাজি করবেন, যেই পার্টি হোক, সেই পার্টিকে আমি বার বার বলছি, চাঁদাবজি করবেন না, মানুষকে দুর্ভোগে ফেলবেন না। তাহলে জনগণকে বলব আপনাদের পিটিয়ে দিতে। আর যারা ধান্দাবাজি করবে, তাদের ওখানেই ধরেন, পেটাবেন না। কী করা লাগে সেটা আমরা করব। ল অ্যান্ড অর্ডারটা নিয়ে আসেন। এ দেশ এভাবে চলতে পারে না। এ দেশ আরেকদিকে যেতে পারে না। এটা কাউকে আমরা লিজ দিতে পারি না।'

Comments

The Daily Star  | English
British Bangladeshi Labour Party lawmaker and  minister Tulip Siddiq

Tulip seeks meeting with Yunus over corruption allegations, Guardian reports

Tulip, in a letter to the chief adviser, asked for a chance to discuss the ongoing controversy during his trip to London

2h ago