সরকারি শিশু পরিবার থেকে বালক নিখোঁজ, নির্যাতনের প্রতিবাদে শিশুদের বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় সরকারি শিশু পরিবার (বালক) থেকে নিখোঁজ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী রিজভীর সন্ধান দাবি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিশুরা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশু পরিবার প্রাঙ্গণে তারা বিক্ষোভ করে। সে সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভের মুখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপতত্ত্বাবধায়ক আসাদুজ্জামান ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক ইলিয়াস হোসেনকে থানায় নিয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে।
রিজভী গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আবাসিক শিশুরা বিক্ষোভ শুরু করে।
বিক্ষোভ চলাকালে অফিসে উপস্থিত ছিলেন উপতত্ত্বাবধায়ক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, 'গত ২ নভেম্বর দুইজন শিক্ষার্থী রিজভী ও নাহিদ প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে যায়। তাদের সন্ধান না পেয়ে ৪ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।'
সহকারী তত্ত্বাবধায়ক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। তিনি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে নাহিদকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন ইলিয়াস। তিনি বলেন, 'নাহিদ যেহেতু রিজভীর সঙ্গে গিয়েছিল এবং পরে ফিরে এসেছে, তাই তার কাছ থেকে সত্য তথ্য জানতে মারধর করা হয়েছে।'
'এ জন্য আমি একা দায়ী নই,' বলেন ইলিয়াস।
শিশুরা আরও অভিযোগ করে, তাদের কখনো পেটভরে খেতে দেওয়া হয় না। শহরের চৌড়হাস এলাকার আবাসিক ভবন থেকে তিন কিলোমিটার দূরে হাউসিং এলাকায় ক্লাসরুমে ঝুঁকিপূর্ণ পথ দিয়ে হেঁটে যেতে হয়।
এক শিক্ষার্থী বলে, 'এখানে আমাদের খুব মারধর করা হয়। দুই কেজি চাল বেশি রান্না করলে হয়তো আমরা পেটভরে খেতে পারতাম, তারা কখনোই আমাদের কথা শোনে না। এখনে এতো মানুষ, তবু ভয় দেখাচ্ছে। আপনারা চলে গেলেই আমাদের চাবুক দিয়ে মারবে।'
নিরাপত্তার স্বার্থে দ্য ডেইলি স্টার ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় প্রকাশ করছে না।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসাদুজ্জামান ও ইলিয়াসকে থানায় নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।'
নিখোঁজ রিজভীর মামা লোকমান হোসেন শিশুদের বিক্ষোভ চলাকালে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, 'গত ৪ নভেম্বর আমার মোবাইল ফোনে খুলনা থেকে একটি কল আসে। জানায়, ট্রেনের ভেতরে রিজভীর ব্যাগ পাওয়া গেছে। এরপর আমরা বিষয়টি উপতত্ত্বাবধায়ক আসাদুজ্জামানকে জানাই। আমাদের চাপেই তিনি থানায় জিডি করেছেন। আমরা দ্রুত রিজভীর সন্ধান চাই।'
Comments