আজীবন রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের আজীবন রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতার একটি অংশের সঙ্গে ছয় উপদেষ্টার বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এই আন্দোলনে আহতদের একটি ইউনিক কার্ড দেওয়া হবে। যা দিয়ে দেশের যে কোনো সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা পাবেন। এ ছাড়া, কিছু বেসরকারি হাসাপাতালের সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার। সেসব হাসপাতাল থেকেও বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। 

সায়েদুর রহমান আরও জানান, যারা ব্যক্তিগত খরচে চিকিৎসা করাচ্ছেন, সেই অর্থ সরকার পরিশোধ করবে। এসব খরচের যাবতীয় কাগজপত্র সংরক্ষণ করার আহ্বান জানান তিনি।

আহতদের জন্য সরকার কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে—আগামী পাঁচ কার্যদিবসের তার লিখিত রূপরেখা দেওয়া হবে উল্লেখ করে সায়েদুর বলেন, এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আর যেগুলো এখনো শুরু হয়নি, সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক সহযোগিতা ঠিক মতো না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসায় সব সরকারি হাসপাতালে পৃথক শয্যা থাকবে। ঢাকার সব হাসপাতালকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। এই ক্ষেত্রে গাফিলতি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। আমরা অনেক অভিযোগ পেলাম, এসব খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিশেষ সহকারী জানান, আন্দোলনে যারা চোখ হারিয়েছেন, তাদের জীবন পরিচালনা সহজ করতে সর্বোচ্চটা করবে সরকার। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
যারা মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন তাদের টেলিমেডেসিন নেটওয়ার্কের আওতায় এনে থেরাপি দেওয়া হবে। এ জন্য দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে সেন্টার থাকবে।

আগামী ১৭ নভেম্বরের পরে সরকারের পক্ষ থেকে একটি সার্পোট সেন্টার খোলা হবে। ওই সেন্টারে আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ গ্রহণ করে সেখান থেকেই সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বৈঠক শেষে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। আহতদের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন নাহিদ। তিনি বলেন, যখন শহীদ ও আহতদের কথা জাতীয় পরিসরে আলোচনায় থাকা উচিত ছিল, তখন সবাই শুধু সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছে। বাকিরা নির্বাচন ও অমুক-তমুক বলার চেষ্টা করছে।

'আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক আলাপে কথাবার্তায় এবং মিডিয়াতে আহতদের কথা তেমন ফোকাস করা হচ্ছে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করা রাজনৈতিকদলগুলোর রাজনৈতিক কর্তব্য,' যোগ করেন তিনি।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও কেন আহতদের রাস্তায় নামতে হলো জানতে চাইলে নাহিদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।

উল্লেখ্য, গত বুধবার উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে বিক্ষোভ করেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের একাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

‘For 15 years I fought for BNP leaders and activists, today they pushed me’

Rumeen Farhana says she was almost knocked down during clash at EC over Brahmanbaria boundaries

2h ago