শর্ত সাপেক্ষে ডিবি হেফাজত থেকে ছাড়া পেলেন মুন্নী সাহা

মুন্নি সাহা | ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে শর্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) নেওয়ার ঘণ্টা খানেক পরে রোববার ভোররাতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ তাকে আটক করেনি। সাধারণ মানুষ আটক করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রথমে তাকে তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার কারণে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'মুন্নী সাহার প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং তিনি একজন নারী সাংবাদিক, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুসরণ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

'তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় মুন্নী সাহা আদালতে জামিন আবেদন করবেন এবং যখনই প্রয়োজন হবে তিনি উপস্থিত হবে—এই শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুচলেকা নিয়ে তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে,' যোগ করেন ডিবি প্রধান।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারার উপধারা (১) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ জামিন অযোগ্য অপরাধে আটক বা গ্রেপ্তার করলেও তাকে জামিন দেওয়া যেতে পারে। এই ধারার অধীন জামিন অযোগ্য অপরাধে জামিন পাওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনগত অধিকার নয়; বরং জামিন অযোগ্য অপরাধে জামিন দেওয়া আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতা। আদালত ইচ্ছা করলে জামিন দিতে পারেন আবার না–ও দিতে পারেন। কিন্তু জামিন অযোগ্য অপরাধে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেবেন না, যদি সে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধে অপরাধী বলে বিশ্বাস করার মতো আদালতের যুক্তিসংগত কারণ থাকে।

বিশেষ বিবেচনায় তিনটি ক্ষেত্রে আদালত জামিন মঞ্জুর করতে পারেন—আসামি যদি শিশু বা বৃদ্ধ হন; পীড়িত বা অক্ষম হন এবং আসামি যদি নারী হন।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটের দিকে কারওয়ানবাজারের জনতা টাওয়ারে একটি মিডিয়া অফিসে যান মুন্নী সাহা। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার পরে একদল মানুষ তাকে ঘিরে ধরেন।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মুন্নী সাহা একটি মামলায় অভিযুক্ত। কারওয়ানবাজার এলাকায় স্থানীয় লোকজনের হাত থেকে উদ্ধার করার পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।'

তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একদল মানুষ তাকে ঘিরে ধরেছে জানার পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মুন্নী সাহাকে উদ্ধার করি। পরবর্তীতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল তাকে হেফাজতে নিয়েছে।'

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে মুন্নী সাহা মানুষকে ভুল বুঝিয়েছেন—এমন অভিযোগ তোলেন কারওয়ানবাজারে উপস্থিত জনতা।

গত ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নায়েম হাওলাদার (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। ওই ঘটনায় ২২ জুলাই ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়। আসামি তালিকায় মুন্নি সাহাসহ সাতজন সাংবাদিকের নাম রয়েছে।

নায়েমের বাবা কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

বাকি ছয় সাংবাদিক হলেন—একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এডিটর-ইন-চিফ মোজাম্মেল হক বাবু, টেলিভিশনটির সাবেক চিফ নিউজ এডিটর (সিএনই) সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সময় টেলিভিশনের পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপন্ডেন্ট ফারজানা রুপা, সাবেক হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ ও শেখ হাসিনার প্রেস সেক্রেটারি নাঈমুল ইসলাম খান।

এজাহারভুক্ত আসামির মধ্যে মোজাম্মেল বাবু, ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ আগেই গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Students’ unions: Legal bars, admin delays stall polls in many universities

Of 56 public universities across the country, only seven have the legal provision for a central students' union

5h ago