রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন

বগুড়ায় হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের দাবি করে মিথ্যা প্রচারণা

রিউমর স্ক্যানার
ছবি: রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বগুড়ায় হিন্দু বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবি করে ভারতীয় এক্স ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা ভিডিওটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ।

আজ সোমবার রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি বগুড়ায় হিন্দু বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবিতে ভারতীয় এক্স (সাবেক টুইটার) ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রচারিত ভিডিওটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনার নয়। বরং মুসলিম বাড়িতে আগুন লাগার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

রিউমর স্ক্যানার
ছবি: রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

অনুসন্ধানে 'Md Rasel Mahmud' নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৭ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ওই ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, বগুড়া সদর সাবগ্রাম ইউনিয়নে ক্ষিদ্রধামা গ্রামে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।

আরও অনুসন্ধানে 'Hakim Press Bogrua' নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত আরেকটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে বলা হয়, বগুড়া সদরের সাবগ্রাম ইউনিয়নের ক্ষিদ্রধামা গ্রামে আগুন লেগে পাঁচটি পরিবার একদম নিঃস্ব। ওইদিন বিকেল ৫ ঘটিকার সময় বগুড়া সদরের সাবগ্রাম ইউনিয়নের ক্ষিদ্রধামা গ্রামে আগুন লাগে। আগুনের সূত্রপাত প্রাথমিক পর্যায়ে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট। এতে করে সাত থেকে আটটি ঘর পুড়ে যায়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত ঘটনার বিষয়ে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক করতোয়ার ওয়েবসাইটে 'বগুড়া সদরের ক্ষিদ্রধামা মধ্যপাড়ায় অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে নিঃস্ব ৭ পরিবার' শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

রিউমর স্ক্যানার
ছবি: রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, 'বগুড়া সদরের ক্ষিদ্রধামা মধ্যপাড়া এলাকায় এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতটি পরিবারের সব কিছু পুড়ে গেছে। বগুড়া ফায়ার সার্ভিস অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ওই এলাকার আবু বক্কর ও ফজলুর রহমানের বাড়ির ওপর দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের পোলে ইলেকট্রিক স্পার্ক হয়।'

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

সময় টিভির বগুড়া জেলা প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এ ছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সবাই মুসলিম।'

রিউমর স্ক্যানার
ছবি: রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সাবগ্রাম ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আশিকুর রহমান বলেন, 'গত ৭ তারিখের আগুনে পাঁচটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা সবাই মুসলিম। প্রথমে সোহেলের বাড়িতে আগুন লাগে। এরপর সেই আগুন ছড়িয়ে যায়।'

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত আমিনুল ইসলাম সোহেল রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, 'আমার ঘরের চালায় বিদ্যুতের খুঁটি ছিল। সেখান থেকে শর্টসার্কিট হয়ে আগুন লাগে। বিকেল ৫টার দিকে আগে লেগেছিল।'

অর্থাৎ, গত ৭ ডিসেম্বর বগুড়ায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মুসলিম পরিবার। সুতরাং, বগুড়ায় মুসলিম বাড়িতে আগুন লাগার ভিডিওকে হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

Comments

The Daily Star  | English

22 sectors still pay wages below poverty line

At least 22 sectors in Bangladesh continue to pay their workers much less than what is needed to meet basic human needs.

5h ago