নরসিংদীতে হানিফ হত্যার ঘটনাকে অজিত দাস হত্যা দাবি করে অপপ্রচার

সংগৃহীত

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও সংযুক্ত করে দাবি করা হয়েছে, সেটি অজিত দাস নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে হত্যার ভিডিও।

প্রীতম রঞ্জন দাস নামে আইডি থেকে এই পোস্ট করা হয়।

দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ভিডিওটি অজিত দাস নামে কাউকে হত্যার ভিডিও নয়। এমনকি সেটি সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাও নয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটি গত ১ অক্টোবরের। ওই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে নরসিংদীর কাউরিয়াপাড়ার ঈদগাঁর সামনে পারিবারিক কলহের জেরে হানিফ মিয়া (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে করে হত্যা করে তারই মামাতো ভাই নাঈম ও নাদিম।

এই ঘটনার ভিডিওকে আওয়ামী লীগের অজিত দাস হত্যার ভিডিও বলে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারের নরসিংদী সংবাদদাতাকে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, 'ঘটনাটি প্রায় তিন মাস আগের। কতিপয় অসাধু ব্যক্তি পারিবারিক কলহে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।'

তিনি বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভিডিওটি আমরা দেখেছি। সেটির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের কোনো বিষয় নেই।'

এ বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জানতে চাইলে নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নরসিংদীতে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অন্তত গত তিন মাসের মধ্যে ঘটেনি।'

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ভিডিওটি দেখানো হলে সুব্রত কুমার দাস বলেন, 'এটা পারিবারিক হত্যাকাণ্ডের একটি ঘটনা ছিল। এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে একটি মহল মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই এবং সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাই।'

ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত হানিফ নরসিংদী পৌর শহরের চৌয়ালা এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে ছিলেন। ঘটনার দেড় মাস আগে নিহত হানিফ তার মামা মো. হাবিব উল্লাহকে পারিবারিক কলহের জেরে রড দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।

নিহত হানিফের পরিবার ও পুলিশ জানায়, পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে হানিফের মামাতো ভাই নাঈম ও নাদিম প্রকাশ্যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে হানিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় নাঈম ও নাদিম।

প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় ৪ অক্টোবর নিহত হানিফের মা সাহেরা বেগম বাদী হয়ে নরসিংদী সদর থানায় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-দুই। অভিযুক্ত নাঈম (৩০) ও নাদিম (২৫) ওই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘We knew nothing about any open letter’

Journalist Bibhuranjan’s son says after identifying his body

2h ago