স্টেশন থেকে ছাড়ছে না ট্রেন, ফিরে যাচ্ছেন যাত্রীরা

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় ফাঁকা রয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলো। ছবি: এমরান হোসেন

রেলওয়ের লোকোমাস্টার ও রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে গত মধ্যরাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতির কারণে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছাড়েনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনে আসা যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছেন। তবে কাউকে কাউকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকতে দেখা যায়। যারা রেলকর্মীদের ধর্মঘটের খবর জানতেন না তারাই মূলত আজ সকালে স্টেশনে এসেছিলেন।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কমলাপুর স্টেশন প্রায় ফাঁকা দেখা যায়। এ সময় বাড়তি পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় সেখানে।

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং অবসর পরবর্তী সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রানিং স্টাফরা।

২০২১ সাল পর্যন্ত লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, গার্ড এবং ভ্রমণকারীর টিকিট পরীক্ষকরা তাদের নির্দিষ্ট কাজের সময়ের বাইরেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এর জন্য অতিরিক্ত বেতন পেয়েছেন। বাড়তি কাজের পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে পেনশন সুবিধাও পেতেন তারা। কিন্তু ওই বছরের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ সরকার বাড়তি কাজের ওপর ভিত্তি করে পেনশন সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় কয়েকজন যাত্রী। ছবি: এমরান হোসেন

২০২২ সালের এপ্রিলে ধর্মঘটের পর রেল মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করে পেনশন সুবিধা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ২০২১ সালের নভেম্বরের আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এছাড়া ২০২২ সালে নিয়োগ পাওয়া সহকারী লোকোমাস্টাররা এই সুবিধা পাচ্ছেন না। কারণ তাদের নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে যে, তারা তাদের চাকরির সময় বা অবসর গ্রহণের পরে অতিরিক্ত অর্থ পাবেন না।

গত বছরের ডিসেম্বরে নিয়োগ পাওয়া লোকোমাস্টাররাও ২০২১ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানান।

সে সময় রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেন। গত ২৩ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায়, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী লোকোমাস্টাররা রানিং অ্যালাউন্স পাবেন, তবে তা তাদের মাসিক মূল বেতনের বেশি হবে না। তবে তাদের অবসর পরবর্তী সুবিধা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

এর প্রতিক্রিয়ায় গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৮ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করে সমিতি।

সোমবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির নির্বাহী সহসভাপতি সাইদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত ১২টার এক মিনিটে আমাদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। নতুন করে আর কোনো ট্রেন চলবে না। তবে যেসব ট্রেন রাত ১২টার আগে ছেড়ে গেছে, সেগুলো যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।'

যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি এবং মালবাহী ট্রেনও কর্মবিরতির আওতায় থাকবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Eid morning in 6 pictures

The morning of Eid-ul-Azha follows old, well maintained patterns

1h ago