কিশোরগঞ্জে আ. লীগ কার্যালয়কে ‘পাবলিক টয়লেট’, ২ জেলায় ম্যুরাল ভাঙচুর

পাবনা, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা,
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করে ভাঙা দেওয়ালে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। ছবি: সংগৃহীত

পাবনা, কিশোরগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের মুর‌্যাল ভাঙচুর করা হয়।

দ্য ডেইলি স্টারের পাবনা সংবাদদাতা জানান, পাবনার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাস ও শেখ হাসিনা ছাত্রী নিবাসের নাম ফলক মুছে দিয়েছে। এছাড়া পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শেখ রাসেল আবাসিক হলের নামফলকও মুছে ফেলা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলার আলহাজ্ব মোড়ে স্মৃতিস্তম্ভের পাশে নির্মিত 'ঘৃণাস্তম্ভ' ভেঙে দেওয়া হয়। গুড়িয়ে ফেলেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষুব্ধরা পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বুধবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, 'পাবনা জেলায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। কোথাও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করে সেখানে ভাঙা দেওয়ালে 'পাবলিক টয়লেট' লিখে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিশোরগঞ্জ শহরের স্টেশন রোডের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও দেয়ালের অংশে বড় করে লেখা হয় 'পাবলিক টয়লেট'। পরে সেখানে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এটাকে 'পাবলিক টয়লেট' ঘোষণা দেয়। এরপর খরমপট্টিতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জের অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করছে। শেখ হাসিনার ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

কিশোরগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'এখানকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।'

ডেইলি স্টারের বেনাপোল সংবাদদাতা জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ম্যুরাল ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে জড়ো হন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপর তারা একটি মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে পৌঁছে সেখানে স্থাপিত শেখ মুজিব ও ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেন।

পরে বিক্ষোভকারীরা পৌরসভা মোড়ে অবস্থিত জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেন। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনা ও অন্যান্য নেতাদের প্রতিকৃতি ভাঙচুর করেন এবং প্রধান সড়কে এসব প্রতিকৃতি ফেলে মাড়িয়ে দেয়। পরে তারা জেলা পরিষদ ও সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জানান, ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার ঘোষণায় তারা ক্ষুব্ধ হন। তাদের এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ফ্যাসিবাদী প্রতীক ধ্বংস করা।

এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) কনক কুমার দাশের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Price war in the garment sector: Exporters fear a race to the bottom

With China, Vietnam and Cambodia vying for market share, Bangladeshi exporters fear a race to the bottom on prices -- one they may not win

10h ago