সুস্থ জীবন-যাপনে হাঁটার গুরুত্ব বোঝাতে টেকনাফ থেকে বাংলাবান্ধায় তাহুরা

বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য উপভোগ এবং সুস্থ জীবন-যাপনে হাঁটার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী তাহুরা সুলতানা রেখা।

গত ২৯ নভেম্বর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে ২৬ দিন ধরে পায়ে হেঁটে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।

দৃঢ় সংকল্প ও সহনশীলতা নিয়ে তার এই দীর্ঘ পথচলা প্রশংসা কুড়িয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের।

'চলুন ইতিবাচক চিন্তা করি, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটি' স্লোগানকে সামনে রেখে একাই যাত্রা শুরু করেছিলেন তাহুরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানার পর পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই পথে তার হাঁটার সঙ্গী হয়েছেন।

তাহুরার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এলাকায়। রশিদ আহমেদ ও তায়েবা খাতুন দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ তিনি।

চট্টগ্রাম মহিলা কলেজ থেকে ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন তাহুরা। বর্তমানে নিজে একটি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সেই আয় থেকেই তিনি ভ্রমণে প্রয়োজনীয় ব্যয় করেছেন।

চট্টগ্রামের আন্দরকিলা এলাকায় ২০২০ সালে একটি ট্রাভেল এজেন্সি চালু করেন তাহুরা। ধীরে ধীরে ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট পণ্য বিক্রি শুরু করেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে তাহুরার কথা হয়।

তিনি বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখার খুব আগ্রহ ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ভালোবাসি।'

তাহুরা জানান, তার 'সি (সমুদ্র) টু হিমালয়' নামে প্রকল্পের অংশ হিসেবে ক্রস কান্ট্রি হাইকিংয়ের তিনটি পর্ব ছিল।

প্রথম পর্বে গত ২৯ নভেম্বর তিনি টেকনাফ থেকে হাঁটতে শুরু করে যমুনার পাড়ে আসেন। যমুনা সেতুতে তিনি হাঁটার অনুমতি না পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর তিনি সাঁতরে যমুনা নদী পার হন। সেখান থেকে প্রথম পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো নারী অভিযাত্রী দলের সদস্য হিসেবে তিনি শীতকালীন হিমালয় অভিযানে নেপালে চলে যান।

সেখানে ২৫ দিন থেকে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেটি ছিল এ অভিযানেরই দ্বিতীয় পর্ব। এরপর তৃতীয় পর্বে গত ১৮ জানুয়ারি তিনি যমুনার পাড় থেকে আবারও হাঁটা শুরু করেন। সর্বশেষে তিনি গতকাল সন্ধ্যায় হেঁটে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।

'এত দীর্ঘ পথ চলতে গিয়ে অনেক মানুষের সঙ্গ পেয়েছি, বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গটা খুবই রোমাঞ্চকর ছিল,' যোগ করেন তিনি।

তাহুরা আশা প্রকাশ করেন, তার এই পদযাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা বয়ে আনবে। বিশেষত, তরুণ প্রজন্মকে হাঁটতে উদ্বুদ্ধ হবে।

মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আরও বিভিন্ন প্রকল্প নিতে চান বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

3h ago