সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি

খুলনা শহরে আয়োজিত নাগরিক পদযাত্রা। ছবি: স্টার

সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি জানিয়েছে খুলনার সংগঠন কৃষি-শিল্প-পাট ও পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার খুলনা শহরে আয়োজিত এক নাগরিক পদযাত্রায় এ দাবি জানায় তারা।

নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২২ ও ২০২৩ সালে পরিবেশ বিধ্বংসী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হওয়ার পর যান্ত্রিক ত্রুটি ও কয়লা সংকটে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ বার বন্ধ হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, কয়েক বছর আগে মাছ থাকলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় নদীতে মাছ কমতে শুরু করেছে। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কারণে চারণভূমির পরিমাণ কমে গেছে, এতে গবাদি পশু পালন কঠিন হয়ে পড়েছে। জীবিকার একটি বড় ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে, বাধ্য হয়ে দূর-দূরান্তে কাজে যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে।

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)-এর গবেষণা অনুযায়ী, কয়লা পরিবহনের ফলে সুন্দরবনের নদী ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। খোলা জায়গায় কয়লা খালাস করায় তা সরাসরি নদীতে পড়ছে, যা জলজ ও বনজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে।

এই বাস্তবতায় সুন্দরবন বাঁচাতে সুন্দরবন রক্ষায় রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে হবে।

নাগরিক কমিটির সভাপতি কুদরত-ই-খুদা বলেন, 'সুন্দরবন রক্ষায় জাতীয় বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখতে হবে এবং বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারী শিল্প স্থাপনা নিষিদ্ধ করতে হবে। পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।'

কমিটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'সুন্দরবনে বিষ দিয়ে যারা মাছ শিকার করছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। খুলনায় একটি পরিবেশ আদালত স্থাপন করতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সুন্দরবন রক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে জাতীয়ভাবে "সুন্দরবন দিবস" ঘোষণা করা জরুরি।'

নাগরিক কমিটির আয়োজনে খুলনার হাদিস পার্ক থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

'সুন্দরবন রক্ষা শুধু পরিবেশ নয়, বরং এ অঞ্চলের লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন' উল্লেখ করে নাগরিক কমিটি তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
 

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

6h ago