বিআরটিএ চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

গতকাল রোববার নগরজুড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ করে যাত্রী দুর্ভোগ তৈরির জন্য বিআরটিএকে দায়ী করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ। তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে জরিমানার প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অসহায় যাত্রীদের নৈরাজ্যকারী অটোরিকশা চালকদের হাতে তুলে দিয়েছে। এ কারণেই প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্তির দাবি জানাচ্ছি।'
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসবিহীন বাস উচ্ছেদ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে মালিক সমিতির পরিবর্তে একটি কোম্পানির আদলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রুট রেশনলাইজেশন পদ্ধতিতে গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেন তিনি। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার উন্নতমানের বাস নামানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
তিনি অভিযোগ করেন, 'ফিটনেসবিহীন পুরনো লক্কড়-ঝক্কর বাসগুলো রাতারাতি গোলাপি রঙ করে চালাতে গিয়ে নগরজুড়ে প্রতিদিন গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।'
গত ১৯ ডিসেম্বর সরকারের চার উপদেষ্টা, পুলিশ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএসহ বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা মহানগরীর ২০ বছরের পুরনো বাস মে মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার সবরুট বিলুপ্ত করে নয়টি রুটে নয় কালারের উন্নত বাস পরিষেবা চালুর নির্দেশনা দেন তিনি।
উপদেষ্টার এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, 'এমন নির্দেশনা অপব্যবহার করে নতুন উন্নত বাসের বদলে ২০ থেকে ৪০ বছর যাবত নগরীতে চলাচলরত মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়-ঝক্কর ফিটনেসবিহীন বাস রাতারাতি গোলাপি কালার ধারণ করে চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়।'
তিনি বলেন, 'এদিকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা ঢাকা মহানগরীর ২১টি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কাউন্টারভিত্তিক পরিচালনার কথা বলে সার্ভিস শুরু করেছে। দুই হাজার ৬১০টি বাসের কালার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিআরটিএ পূর্ব অনুমোদন দেয়নি। এসব বাসের তালিকা বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগ কারো কাছে পাওয়া যায়নি।'
রঙ করা বাসের প্রসঙ্গে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, 'এসব বাস-মিনিবাসের সিংহভাগই ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর, অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা আবর্জনায় ভরপুর। কোনো কোনো বাসের পেছনে লাইট-ইনডিকেটর ও লুকিং গ্লাস নেই। আসনে দুই পা মেলে বসা যায় না। কোনো কোনো বাসের পাদানি, ধরার হ্যান্ডেল ভাঙা। সিটগুলো ময়লা-আবর্জনা, ছারপোকা-তেলাপোকায় ভরপুর।'
কোনো কোনো পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Comments