আর যদি একটি সীমান্ত হত্যার ঘটনাও ঘটে, তাহলে আরও কঠোর অবস্থানে যাব: বিজিবি প্রধান

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সীমান্ত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখলে আরও 'কঠোর অবস্থানে' যাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

আজ শনিবার কক্সবাজারে ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, 'অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটুক আর যাই ঘটুক, হত্যা কোনো চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না।'

তিনি বলেন, 'আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং এটা মেনে নেওয়া যায় না। এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের যে আমরা সুন্দরভাবে নিয়মের মধ্যে গ্রেপ্তার করে হস্তান্তর করি, সেটা কতটুকু আর করা যাবে!'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। আর যদি একটি হত্যার ঘটনাও ঘটে, তাহলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব।'

উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৩২ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক আল-আমিন।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে আল-আমিনকে পুটিয়া সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। বিএসএফ তাকে চোরাচালানকারী সন্দেহে গুলি চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।

বিজিবি প্রধান জানান, এই ঘটনায় প্রায় ১৫-২০ জন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করছিলেন। বিএসএফ বাধা দেওয়ার পর সংঘর্ষ বাঁধে এবং বিএসএফ রাবার বুলেট ছোঁড়ে। বিএসএফের একটি বুলেট আল-আমিনের পেটে আঘাত করে, যার ফলে তার মৃত্যু হয়। বিএসএফ দাবি করেছে, তাদের একজন সদস্যও সংঘর্ষে আহত হয়েছে। তারা এই ঘটনার কিছু ছবিও পাঠিয়েছে বিজিবির কাছে।

তিনি আরও বলেন, 'কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে, বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।'

'আমরা সবসময় বলে আসছি, অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনি উপায়ে সামলানো উচিত, হত্যার মাধ্যমে নয়। যদি এসব ঘটনা চলতে থাকে, আমরা আমাদের প্রতিবাদ আরও জোরদার করব এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব,' যোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, 'সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবির সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। আজ আমরা ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের জন্য আরও তিনটি ইউনিট যুক্ত করেছি, যা আমাদের সক্ষমতা বাড়াবে। তবে আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো দরকার।'

এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমরা সীমান্ত নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দিলেও মানবিক কারণে অনেক সময় পারা যায় না, বিদেশিদের একটা চাপও থাকে।'

কসবা সীমান্ত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগেই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার পরও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা এগুলো কমানোর জন্য কাজ করছি, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও জটিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

3h ago