নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে শাহবাগে ৩০ কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান

নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ এবং নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তারা জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, রমজানে জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে তারা পূর্বঘোষিত 'শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি' থেকে সরে এসেছেন। এর পরিবর্তে তারা আজ জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করবেন।
ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী জানান, সকাল থেকেই ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা জাতীয় যাদুঘরের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন।
এসময় তাদের ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেননি। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।'
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ছয়টি দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। সেগুলো হলো—
ধর্ষকের শাস্তি জনসমক্ষে নিশ্চিত করা। ধর্ষকদের শাস্তি প্রকাশ্যে নিশ্চিত হলে সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রয়োজনে ধর্ষকদের বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে।

দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। যদি কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা, মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করা এবং ভিকটিম ও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। পরবর্তী ১৫ কার্যদিবস সময়ে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটিতেও অসামঞ্জস্য থাকলে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
ধর্ষণের ঘটনায় সালিসি বিচার নিষিদ্ধ করতে হবে। বিচার নিশ্চিত করবে শুধু রাষ্ট্র। পাশাপাশি অনৈতিক পন্থায় প্রশাসনের কারও সহযোগিতায় যদি ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামি ছাড়া পায়, তবে তদন্ত অনুযায়ী তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তি অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিধান করা যেতে পারে।
চলমান মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
Comments