ঈদে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করাসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. জিয়াউল হক মীরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদ-উল-ফিতরের প্রাক্কালে সারাদেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। সেইসঙ্গে, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন, বিশেষ বিশেষ রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন, টাকা স্থানান্তরে মানি এস্কর্ট, জাল টাকার বিস্তার রোধ ও সনাক্তকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ দেশের অন্যান্য বড় শহর ও বন্দরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবের টহল বাড়াতে হবে।

এছাড়াও, গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পের মালিকপক্ষ অর্থাৎ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশ একসঙ্গে বসে ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা, বোনাস ইত্যাদি পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঈদ উপলক্ষে সাধারণ জনগণের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন ও নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করতে হবে। মার্কেটগুলোতে বিশেষ রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং সব মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ নিশ্চিত করার জন্য বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, লঞ্চ/ফেরি ঘাটে অনিয়ম ও অবৈধ সিরিয়াল দেওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করা, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা এবং পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং ফ্লাইওভারসহ টোলপ্লাজায় যানজট নিরসনে ইটিসিসহ দ্রুত টোল আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

যানজট নিরসনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক চিহ্নিত ১৫৫ স্পটে আইপি/সিসি ক্যামেরা স্থাপনপূর্বক ঈদুল ফিতরের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময় মনিটরিং জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করা যেতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ঈদের আগের ৭ দিন ও পরের ৭ দিন সুনির্দিষ্ট পূর্ব তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী কর্তৃক সড়কের ওপরে যানবাহন থামানো যাবে না।

সেইসঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী বা যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়া স্থলবন্দর ও নৌবন্দরসহ যে কোনো জায়গা থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ও লম্বা যানবাহনসমূহ ঈদের আগের ৩  দিন এবং পরের ৩  দিন যেন মহাসড়কে চলাচল করতে না পারে বা নৌ-রুটে ফেরি পারাপার করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঈদের আগের ৫ দিন ও পরের ৫ দিন নদীতে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে এবং বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও নৌ-পথে আকস্মিক দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজ পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম, রেসকিউ বোট, ডুবুরি, অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদিসহ অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনা কবলিত অথবা রাস্তা/ব্রিজে কোনো গাড়ি নষ্ট হলে দ্রুত দুর্ঘটনা কবলিত/অকেজো গাড়ি অপসারণ/রেকারিং করে পার্শ্ববর্তী খালি জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে। যমুনা ও পদ্মা সেতুসহ যানজটপ্রবণ এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেকারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এছাড়াও ঈদের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অধিদপ্তর এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক কন্ট্রোলরুম স্থাপন করতে হবে। সব কন্ট্রোল রুমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সাথে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বয় জোরদার করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
rohingya-migration

Persecuted by Arakan Army, Rohingyas fleeing to Bangladesh

Amid escalating violence in Myanmar’s Rakhine State, Rohingyas are trespassing into Bangladesh every day, crossing the border allegedly to escape the brutality of Myanmar’s rebel group, the Arakan Army (AA).

2h ago