বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর কোথাও নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর কোথাও নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসব পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড মোতায়েন রয়েছে৷ এছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও কাজ করছেন৷ সড়ক ও নদীপথে পুণ্যার্থীদের যাতায়াতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় আছে। এখানে যত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে, তা আর কোথাও নেই। এখানে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই একসঙ্গে আছে এবং একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর কোথাও নেই।'
দেশের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা বিঘ্নিত করতে 'উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর' বিরুদ্ধে দেশীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কয়েকটি ঘাট পরিদর্শন করেন এবং পুণ্যার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

এদিকে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে দেশি-বিদেশি লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে৷ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বন্দর ও সোনারগাঁ উপজেলার প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে বিশটি ঘাটে এবার স্নানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ২টা ৮ মিনিটে স্নানোৎসবের লগ্ন শুরু হয়৷ স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার আগে থেকেই নদের দুই তীরে পুণ্যার্থীদের আগমন শুরু হয়, যা ভোর থেকে বাড়ে৷
এ বছর অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছেন লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী।
কন্যা ও ছেলের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাজঘাটে স্নানপর্ব সেরেছেন ৬৩ বছরের রীতা রানি সরকার৷ কামনা করেছেন নিজের আরোগ্য এবং পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য।
কুমিল্লার তপন দাস বলেন, 'পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি৷ স্নানের পর মনে প্রশান্তি পাচ্ছি৷ প্রার্থনা করেছি যেন ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করেন৷'
সড়কপথে যানজটে ভোগান্তির কথাও জানান পুণ্যার্থীরা।
আয়োজকরা জানান, মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দুর্বা, হরিতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নেন। লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নামে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে৷ তাদের উলুধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠে প্রতিটি স্নানঘাট।
রোববার রাত পৌনে একটা পর্যন্ত চলবে স্নানোৎসব।
Comments