‘ট্রান্সশিপমেন্ট স্থগিতে কূটনৈতিক প্রোটোকল ও শিষ্টাচার রক্ষা করেনি দিল্লি’

প্রতীকী ছবি: স্টার

স্থলপথে বাংলাদেশি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে নয়াদিল্লি সাধারণ কূটনৈতিক প্রটোকল ও শিষ্টাচারও অনুসরণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

এই সিদ্ধান্তকে 'দুঃখজনক ও অপ্রয়োজনীয়' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, মোদি-ইউনূস বৈঠকের পর সম্পর্কোন্নয়নের আশা দেখা দিলেও আদতে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক আরও শীতল হচ্ছে। 

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত আজ বুধবার প্রকাশ হওয়ার পর দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

ভারত সরকারের ২০২০ সালের এক আদেশ অনুযায়ী, তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানিতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের একটি শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে অন্য কোনো বন্দর বা বিমানবন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পেত বাংলাদেশ। ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে স্থলপথে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি করতে পারত। 

গতকাল মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই আদেশটি বাতিল করে। 

'এটা খুবই দুঃখজনক। এর ফলে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি জানি না ভারত কেন এমন করছে, এখানে কী লাভ দেখছে,' বলেন জাহিদ হোসেন।

তিনি আরও বলেন, 'নেপাল-ভুটানে পণ্য রপ্তানির জন্য এখন বাংলাদেশের হাতে বিকল্প হিসেবে শুধু আকাশপথই খোলা আছে।'

'কিন্তু স্থলপথের চেয়ে আকাশপথ অনেক বেশি ব্যয়বহুল। আবার কী পরিমাণ পণ্য পাঠানো যাবে, সেই ব্যবস্থাপনাটাও কঠিন। যে কারণে এই সিদ্ধান্ত (রপ্তানিতে) বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াবে,' যোগ করেন জাহিদ।

এই প্রতিবন্ধকতার কারণে নেপাল ও ভুটান সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করেন তিনি। 

নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, 'এই দেশ দুটোর অর্থনীতি বাংলাদেশের তুলনায় অনেক ছোট। হঠাৎ করে যদি বাংলাদেশ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলারের পণ্য আসা বন্ধ হয়ে যায়, এটি সরাসরি তাদের মূল্যস্ফীতি, সরবরাহব্যবস্থা ও দ্রব্যমূল্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। আর আমরা তো বৈদেশিক অর্থ হারাবোই।'

নোট: অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন মন্তব্য দেওয়ার এবং এই  প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাখা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হলেও, 'ভারতের ভূখণ্ড হয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।'

Comments

The Daily Star  | English

Most banks fail to finalise annual financial reports

BB seeks govt approval to extend deadline

3h ago