১৫ বছর পর বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব

প্রায় ১৫ বছর পর বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই বৈঠক (এফওসি) শুরু হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকা ও ইসলামাবাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সেই প্রেক্ষাপটে গত ১৫ বছরের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে এটি প্রথম আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক বৈঠক।
বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং পাকিস্তান পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।
এফওসি শেষে আমনা বালুচ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় তিনি ঢাকায় বসবাসরত পাকিস্তানি প্রবাসী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন।
আগামী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের পূর্বে এই পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দুবার বৈঠক করেছেন। প্রথমটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে এবং পরবর্তীটি ডিসেম্বরে কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে।
এরপর থেকে বাংলাদেশ পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে এবং সরাসরি নৌপথ চালু করেছে। পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়, বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।
২০১৫ সালে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, ১৯৭১ পূর্ববর্তী সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা এবং ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে গৃহীত বৈদেশিক সাহায্য ফেরত চেয়েছিল বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও গভীর করতে হলে ঐতিহাসিক এই বিষয়গুলোর সমাধান জরুরি।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করবেন। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটি হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে শেষ এফওসি ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
Comments