‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে’ স্লোগানে মে দিবস পালন

মে দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার
মে দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

'শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে' স্লোগানের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মে দিবস

আজ নানা কর্মসূচিতে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য 'শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে'।

শোভাযাত্রা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন আজ বৃহস্পতিবার এই দিবসটি পালন করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি পালন করছে।

দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীতে 'শ্রমিক সমাবেশ' করবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। আজ দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সমাবেশ। শ্রমিক দলের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন।

এছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন। ঢাকাসহ তার আশপাশের শিল্পাঞ্চল থেকে শ্রমিকরা এ সমাবেশে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

১৮৮৬ সালের ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য ও দৈনিক (সর্বোচ্চ) আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকেরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন—তাদের সেই আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।

দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে সকল গণমাধ্যম বিভিন্ন লেখা প্রকাশ ও অনুষ্ঠান প্রচার করছে। মহান মে দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়।

দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। মালিক-শ্রমিক সম্পর্কে এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এর ফলে শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় নেমে আসে আট ঘণ্টায়। সারা বিশ্বের শ্রমিকরা তাদের শ্রমের উপযুক্ত মর্যাদা পেতে শুরু করেন। তারা নিজেদের অধিকার আদায়ে সফল হন।

মে দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার
মে দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

বিশ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় সামাজিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়। মে দিবসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়, তার ফলে ধীরে ধীরে লোপ পেতে শুরু করে সামাজিক শ্রেণি-বৈষম্য। তবে শ্রেণি-বৈষম্য এখনও পুরোপুরি দূর না হলেও মে দিবসের সেই আত্মত্যাগ নিপীড়িত শ্রমজীবী মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে অনেকটাই মুক্ত করেছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শ্রম অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়নে গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।

কমিশন শ্রম বিষয়ে অংশীজন ও বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ২১ এপ্রিল তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে তারা।

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

6h ago