বন্যার পানি কমতেই ৪ জেলায় তিস্তার অন্তত ৮০ পয়েন্টে ভাঙন

গরিবুল্লাহ পাড়ায় তিস্তার ভাঙনে দিশাহারা মানুষ | ছবি: স্টার

তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের চার জেলা—লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার অন্তত ৮০টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও নানা স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গরিবুল্লাহ এলাকার কৃষক সেকেন্দার আলী বলেন, 'সোমবার রাত থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছি।'

প্রতি বছরই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী গ্রামের কৃষক করিম মিয়া জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল তার দুই বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

'বাকি চার বিঘা ভাঙন ঝুঁকিতে আছে,' বলেন তিনি।

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, তার ইউনিয়নের অন্তত ১০টি পয়েন্টে নদী ভাঙছে।

'বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে। অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সম্পদের তালিকা করছি,' বলেন তিনি।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়ার চর এলাকার কৃষক জাহিদ হোসেন জানান, 'রাতের আঁধারে ১২টি বসতভিটা নদীতে ভেসে গেছে। আমার তিন বিঘা জমি ইতোমধ্যে চলে গেছে। এখন বসতভিটাও হুমকিতে।'

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বগুড়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর আজগর আলী বলেন, 'আমার বসতভিটা তিস্তার ভাঙনে ভেসে গেছে। পরিবার নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছি। পানির চেয়ে এখন ভাঙনের আতঙ্ক বেশি।'

তবে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, ভাঙন এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে।

তিনি বলেন, 'আমরা গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছি।'

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, 'তিস্তা নদীতে পানি বাড়লে বন্যা সৃষ্টি করে, আবার পানি কমলে শুরু হয় ভাঙন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় লালমনিরহাট। এখন বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, সেই সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

8h ago