ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল—প্রশ্ন আসিফ নজরুলের

চিকিৎসকদের অনেকেই তাদের রোগীদের স্বার্থ না দেখে ওষুধ কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রোগীদের নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে আসে আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার নির্দিষ্ট সময় কেন বরাদ্দ থাকে, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না।
আইন উপদেষ্টা সরাসরি প্রশ্ন তুলে বলেন, চিকিৎসকরা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে কাজ করছেন?
আজ শনিবার ঢাকার শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, তার একজন নিম্ন আয়ের কর্মচারীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দেওয়া হয়েছিল। পরে ময়মনসিংহে পরিচিত এক ডাক্তারের কাছে টেস্ট ছাড়াই তিনি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন।
গরিব রোগীদের ওপর এই অত্যাচার বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টার ভাষ্য, চিকিৎসকরা রোগীদের কথা ঠিকমতো শোনেন না, রোগী কথা বলার মাঝেই প্রেসক্রিপশন লেখা শুরু করে দেন, অথবা বিরক্তি নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বিদেশে চিকিৎসকদের কথা শোনার প্রশংসা করে বলেন, সেখানে ডাক্তার এত মন দিয়ে কথা শোনেন যে রোগী অর্ধেক ভালো হয়ে যান, আত্মবিশ্বাস ফিরে পান।
রোগীদের সঙ্গে হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের 'খারাপ ব্যবহার' প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, বেতন কম পাওয়ার ফলেই তারা এমন আচরণ করেন। তিনি বলেন, একজন প্রশিক্ষিত নার্স মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন পান, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে তার নিজের বাড়ির কাজের লোক এর সমান বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পেতেন।
হাসপাতাল মালিকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা যেন নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও ভালো বেতন দেন। তার মতে, অনেক মালিকের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকলেও তারা কর্মীদের সামান্য বেতন বাড়ান না। মুনাফা থেকে ১০ ভাগ টাকা কর্মীদের পেছনে খরচ করলেও হাসপাতালের সেবার মান অনেক উন্নত হবে।
আইন উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, এটা করা গেলে রোগীদের বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।
Comments