জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম কোম্পানি নয় সরকার নির্ধারণ করবে: হাইকোর্ট

জীবনরক্ষাকারী সব ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে এবং উৎপাদনকারী কোম্পানি এই দাম ঠিক করতে পারবে না বলে এক রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন।
এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালত রায়ে বলেন, সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব।তাই সরকারকে অবশ্যই দাম নির্ধারণ করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেছিল।
আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৯৮২ সালের ড্রাগ কন্ট্রোল অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, সরকার ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৭৩৯ ধরনের ওষুধের দাম নির্ধারণ করেছিল।'
'কিন্তু ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি সার্কুলার জারি করে ১১৭ ধরনের ওষুধের দাম ঠিক করে এবং বাকি ওষুধগুলোর দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কোম্পানিগুলোর হাতে দেয়,' বলেন তিনি।
১৯৯৪ সালের ওই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করে এইচআরপিবি।
আজকের রায়ে হাইকোর্ট ওই সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, 'ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যায় ব্যবহৃত ওষুধগুলো জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে গণ্য হয়। হাইকোর্টের রায়ের পর এসব ওষুধের দাম এখন থেকে সরকার নির্ধারণ করবে, কোম্পানি নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু ওষুধ মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান উপাদান এবং দাম বৃদ্ধি সরাসরি নাগরিকের জীবন অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই সরকারের ক্ষমতা সীমিত করে দেওয়া এবং ওই সার্কুলার জারি করা নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।'
আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ এজাজ কবির বলেন, বিদ্যমান আইনের আলোকে ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে ইতোমধ্যে সরকার একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে।
শুনানির সময় ড্রাগ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসকে মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
Comments