প্রথম আলো আর বিএনপি সাপ্লিমেন্ট করে একে অপরকে: ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

সরকারকে হেয় করতে প্রথম আলো ও বিএনপি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, 'প্রথম আলোর প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রথম আলো আর বিএনপি একজন আরেকজনের পরিপূরক।'

ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়স্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় সভাপতির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনে এ ধরনের সাংবাদিকতা ফৌজদারি অপরাধ। প্রথম আলো বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধারে কাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশবাসীর কাছে জনপ্রিয়। মানুষ ভালোবেসে টানা তিন মেয়াদে এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। কিন্তু প্রথম আলো জনপ্রিয় সরকারকে হেয় করার জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে ছোট করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, বিশেষ দিনে বিশেষ এজেন্ডা সেটিংয়ের মাধ্যমে প্রথম আলো মহান মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে এবং বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করছে। এ ছাড়া বর্তমান সরকারকে প্রথম আলো তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ তা সফল হতে দেবে না। ষড়যন্ত্র করলে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবাদটি যে ভাষায় একটি দিনমজুরের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে সেটি কি সাধারণ দিনমজুরের বক্তব্য, না কি প্রথম আলোর দেওয়া বয়ান- সেটি ভাববার সময় এসেছে। ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশনার দায় পত্রিকাটির সম্পাদক কোনো ভাবেই এড়াতে পারেন না। অথচ ক্ষমা না চেয়ে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে পত্রিকাটি। তরুণ প্রজন্মকে উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগ, লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর এ উদ্যোগ জাতিসত্তাবিনাশি অপতৎপরতা নয় কি? স্বাধীনতা দিবস তরুণ প্রজন্মের কাছে দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধ সৃষ্টির একটি অনন্য দিন। অথচ এই দিনে পলিটিক্যালি সিলেকটেড বিশেষ এক এজেন্ডা সেটিংয়ের উদ্দেশ্যে ওই সংবাদটি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অর্জনকে অস্বীকার করার সামিল নয়?

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই  আমরা দেখেছি- স্বাধীনতা দিবসের দিন সেদেশের গণমাধ্যম অনুপ্রেরণামূলক বাণী দিয়ে উৎসাহ করে। আর প্রথম আলো তাদের প্রভুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য জাতির সামনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে, তরুণ প্রজন্মকে হতাশা ও উস্কানি দেওয়ার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারের বিবৃতি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই প্রতিষ্ঠান বলছে- সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্যই সরকার এ ধরনের মামলা করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে। আমি প্রথমে বলতে চাই সরকার কিন্তু এখানে মামলা করেনি। মামলা সাধারণ একজন নাগরিকও করতে পারে। সরকার মামলা করেছে এটা সর্বাগ্রে মিথ্যা। আর ভয় দেখানোর কথা যে বলা হচ্ছে- কাকে ভয় দেখাব? যাকে ভয় দেখানোর কথা বলা হয়েছে- তিনিই এই দেশের মানুষকে ভয়ের মধ্যে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশে রাজনীতিকে ভয় দেখিয়েছিলেন। তিনি এদেশের সাংবিধানিক সরকারকে ভয় দেখিয়েছিলেন অসাংবিধানিক সরকারের পক্ষে ওকালতি করে। তারপরও কি ওয়ান-ইলেভেন আমাদের মনে নেই? কে কাকে ভয় দেখায়। তিনি বিরাজনীতির ফায়সালা নিয়ে পত্রিকার রিপোর্ট করেছেন আমরা কি ভুলে গেছি?

তিনি বলেন, প্রথম আলো আর বিএনপি সাপ্লিমেন্ট করে একে অপরকে। টার্গেট শেখ হাসিনা, টার্গেট সরকার, টার্গেট জনগণ। টার্গেট আগামী নির্বাচন ভণ্ডুল করা।

যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election 2026: CA’s office sends letter to EC

With this letter, the government has formally requested the EC to arrange the election

1h ago