যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নয়, জনগণের কাছে জবাবদিহি করুন: মির্জা ফখরুল

ভিসা নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নয় বরং জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

ভিসা নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নয় বরং জনগণের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি করেছে, করুক, আমাদের কিছু যায় আসে না। ভিসা নীতি আমরাও করতে পারি।'

'উত্তর কি দেব বলেন? এখন আপনারাও ভিসা নীতি করেন না দেখি। এটা ভিসা নীতিরও প্রশ্ন না। প্রশ্ন হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহি নয়, আমাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করছেন কি না বলেন। এটাই যথেষ্ট।'

আজ রোববার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নীতির প্রসঙ্গ টেনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। 'চির ভাস্বর শহীদ জিয়া, জ্যোতির্ময় খালেদা জিয়া, দীপ্তিমান তারেক রহমান' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। গ্রন্থের লেখক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল হাসনাত মো. শামীম।

জনগণের ওপর অত্যাচার চালিয়ে তাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'জনগণ বলছে, আমি ভোট দিতে পারছি না। জনগণ বলছে, আমার ওপর অত্যাচার হচ্ছে-নির্যাতন হচ্ছে, অন্যায়ভাবে আমার কাছ থেকে ট্যাক্স আরোপ করে টাকা নিয়ে যাচ্ছে, আদালতে গেলে আমি ন্যায় বিচার পাই না… এ বিষয়গুলো আজকে বড় সমস্যা।'

'আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এরা কি গণতন্ত্র দেবে? এরা বার বার করে বলে যে, আমরা নির্বাচন দিচ্ছি তো… একটা ভালো নির্বাচন হবে কথা দিচ্ছি। আরে মানুষ বিশ্বাস করবে কি করে তোমাদের… তোমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবে?'

'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কোন দিন ভালো নির্বাচন করেছে? কোনো দিন না। দেখুন প্রত্যেকটা নির্বাচন… এমন কি '৭৩ সালে তারা একই ঘটনা ঘটিয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এক দলীয় বাকশাল করা হয়েছে। দুঃশাসনের কারণে সেদিনও দুর্ভিক্ষ হয়েছে। এখন ১৪ বছর ধরে স্টিম রোলার চালাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে।'

'আমরা দেশিদের কাছে যাই না'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমাদেরকে বলে যে, আমরা নাকি বিদেশিদের কাছে যাই। আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না। মাঝে মধ্যে বিদেশিরা আমাদের ডাকেন। জানতে চান যে, দেশে কি হচ্ছে? তোমরা কি করছ? যেকোনো দেশ এগুলো জানতে চাইবে আর যারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে তারা জানতে চাইবে।'

'যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষিত নীতি হচ্ছে যে, পৃথিবীতে তিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে চান। সুতরাং তারা তাদের কাজ করছে। কোথায় গণতন্ত্র নেই সেকথা তারা বলে দেন, তাদেরকে গণতন্ত্রের সম্মেলনে ডাকেন না, তাদের স্যাংশন দেন।'

বাংলাদেশের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমরাই মনে করি যে, এখানে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, এখানে ভোটের অধিকার দেওয়া হচ্ছে না, মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আজকে দেখেন পত্রিকায় আছে, একজনকে নিয়ে গেছে, নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে ডিবি। এখন হাসপাতালে দিয়ে এসেছে…।'

'দুইদিন আগে চট্টগ্রামে তারুণ্যের সমাবেশে ছাত্র দলের মেয়েরা এসেছিল। সমাবেশে শেষে মিরসরাইতে ফিরে যাওয়ার পথে অটোরিকশা থামিয়ে ছাত্রলীগ-যুব লীগের ছেলেরা তার ওপর অত্যাচার করেছে। কয়েক ঘণ্টা একটা বাসায় আটকে রেখেছে। তার মা খোঁজ পাওয়ার পর যখন গেছেন তখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানাওয়ালা করেছে কী? তারা একটা পুরোনো মামলায় তাকে আসামি করে জেল হাজতে আটকে রেখেছে, পরেরদিন আদালতে দিয়েছে। আর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এটাই হচ্ছে বিচার ব্যবস্থা। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে একটা মেয়েকে আটক করে নির্যাতন করে তাকে আবার কারাগারে পাঠায়। এই রাষ্ট্রে এই সমাজে কি করে গণতন্ত্রের কথা বলবেন, কি করে এখানে নিজের অধিকারের কথা বলবেন।'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'যারা এই সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। এই বিষয়গুলো আমরা বলছি, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা বলছেন, কিন্তু তাদের (সরকারের) কানে যাচ্ছে না।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামের সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক আবদুল হাসনাত মো. শামীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম এবং বইয়ের লেখক অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago