যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ভূ-রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিএনপি ছাগলের তিন নম্বর ছানা।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা মনে করে, গণমাধ্যমের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল।’
রাজশাহী শহরের পাঠানপাড়ায় যুব লীগের রাজশাহী মহানগর ও জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: বাসস

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'ভূ-রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিএনপি ছাগলের তিন নম্বর ছানা।' একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা মনে করে, গণমাধ্যমের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল।'

মন্ত্রী আজ বিকেলে রাজশাহী শহরের পাঠানপাড়ায় যুব লীগের রাজশাহী মহানগর ও জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা ভাবছেন এভাবে লাফালাফি করে ক্ষমতায় যেতে পারবেন! আজকে ভূ-রাজনীতিতে বিএনপি হচ্ছে ছাগলের তিন নম্বর ছানা। যারা বাতাস দিয়ে আপনাদেরকে লাফাতে দিচ্ছে তারা আপনাদের দুধ দেবে না। ছাগলের তিন নম্বর ছানা যেমন দুধ পায় না আপনারাও পাবেন না। সুতরাং এতো লাফালাফি করে লাভ নেই।'

আগামী মাসে রাজনীতির ফাইনাল খেলায় আমরা আওয়ামী লীগ যাব না, যুবলীগকে পাঠাব উল্লেখ করে হাছান বলেন, 'আমরা আমাদের ফার্স্ট টিম পাঠাব না, সেকেন্ড টিম পাঠাব। প্রয়োজনে মহিলা আওয়ামী লীগকেও পাঠাব। বিএনপিকে বলব, উনাদের সঙ্গে আগে খেলেন। তারপর প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে খেলবে।'

সতর্কবাণী দিয়ে তিনি বলেন, 'তবে বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, ফাইনাল খেলার আগে আপনাদের খেলোয়াড়েরা দলে থাকে কি না, না কি দল বদল করে ফেলে, সেটি একটু খেয়াল রাখবেন। ফাইনাল খেলার আগেই যদি আপনাদের খেলোয়াড়েরা দল বদল করে ফেলে তাহলে ফাইনাল খেলতে পারবেন না।'

বিএনপি আমলে রাজশাহী অঞ্চল সন্ত্রাসের জনপদে রূপান্তরিত হয়েছিল মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, 'এখানকার বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান পুরো দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে রূপান্তরিত করেছিল। ওরা বলে, বিএনপি-তারেক রহমান আবার আসবে। আর এলে তিনি কী করবেন, আবার হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন বানাবেন। আবার একযোগে ৫০০ জায়গায় নয়, ৫ হাজার জায়গায় বোমা ফুটবে। আর সারাদেশে বাংলা ভাই সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ পাকিস্তান-আফগানিস্তানের পর্যায়ে যাবে। আমরা সেটি হতে দিতে পারি না।'

মার্কিন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। ভিসা নীতি একটি বিচ্ছিন্ন বিষয়। তারা কাকে ভিসা দেবে না দেবে সেটা তাদের ব্যাপার। এটি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের একটি কথায় আমি উদ্বিগ্ন। তিনি বলেছেন, ভিসা নীতির আওতায় গণমাধ্যমও আসবে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের গণমাধ্যম অত্যন্ত স্বাধীন এবং স্বচ্ছভাবে কাজ করে এবং অত্যন্ত শক্তিশালী। আর শক্তিশালী, স্বাধীন গণমাধ্যম সবসময় গণতন্ত্রের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সুতরাং কোন যুক্তিতে গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি কার্যকর হবে সেটি আমার বোধগম্য নয়। গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংবাদিক-কলামিস্ট যারা যুক্ত আছেন তারা মনে করছেন এটি আমাদের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ।' তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়। গণমাধ্যমকর্মীরা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এটি মেনে নিতে পারে না।'

যুবলীগকে আওয়ামী লীগের অগ্রগামী বাহিনী ভ্যানগার্ড হিসেবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, 'বাংলাদেশকে যারা সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য বানাতে চাচ্ছে; যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে; দেশকে যারা বিশ্ববেনিয়াদের ক্রীড়াক্ষেত্র বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে; বাংলাদেশকে যারা পেছনে নিয়ে যেতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড হচ্ছে যুবলীগ।' তিনি বলেন, 'সমস্ত ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত যুবলীগ ইনশাআল্লাহ ভেঙে দেবে এবং আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থবার তথা পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রীর আসনে আসীন করে আমরা ঘরে ফিরে যাব।'

যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন ও জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টুর সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

প্রধান বক্তা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, জেলা শাখার সভাপতি অনিল কুমার সরকার প্রমুখ সম্মেলনে বক্তৃতা দেন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago