ক্ষমতাসীনরা দেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

‘ছোটকালে মায়েরা আমাদের ঘুমাতে নিয়ে একটা গান গাইতো… ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে… এরা হলো সেই বর্গী। তারা আসবে, লুট করবে, নিয়ে চলে যাবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাসীনরা দেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'দেশটাকে একটা লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। ছোটকালে মায়েরা আমাদের ঘুমাতে নিয়ে একটা গান গাইতো… ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে… এরা হলো সেই বর্গী। তারা আসবে, লুট করবে, নিয়ে চলে যাবে।'

'এবার মানুষ জেগে উঠেছে। আমার বিশ্বাস, সকল মানুষের বিশ্বাস, জনমানুষের বিশ্বাস এবার পরিবর্তন হবে। আর কথা নয়, কথা একটাই, কাল-বিলম্ব না করে আসুন সবাই দলমত-নির্বিশেষে, বাম-ডান, উত্তর-দক্ষিণ বুঝি না, যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা সবাই জেগে উঠুন, ঐক্যবদ্ধ হোন। এই ভয়াবহ দানবের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করুন, এই দানবকে সরাতে হবে', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আওয়ামী লীগের মধ্যে যে কয়েকজন পড়াশোনা করা মানুষ তার মধ্যে তিনি একজন... আমরা তাই জানতাম। তার যে এই করুণ অবস্থা, ইউরেনিয়াম কী জিনিস তা-ই জানেন না। এটার জন্য তো বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না।'

'উনি (ওবায়দুল কাদের) একটা কথা বলেছেন, তলে তলে…। এটাই হয় দলগুলোতে সরকারগুলোতে, তোষামোদি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, তা হাস্যরসে পরিণত হয়। আমাদের এক নেতা বাইরে থাকেন, তিনি আমাকে বললেন যে, এই ধরনের কথা উনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, আপনি কিন্তু প্রতিবাদ করতে যাইয়েন না। কেন? জানতে চাইলে বললেন, এটা তো আমাদের জন্য বিনোদনের ব্যাপার হয়ে গেছে, এটা আমাদের জন্য এন্টারটেইনমেন্ট', যোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সর্বনাশ করে দিয়েছে বাংলাদেশের… সর্বনাশ। আমার কথা না পত্রিকাগুলো খুলে দেখুন, অর্থনীতির সূচকগুলো নামতে শুরু করেছে নিচের দিকে। রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে, গার্মেন্টস রপ্তানি কমে যাচ্ছে, বৈদেশিক টাকা আসছে না। এমন একটা অবস্থা করেছে যে, আর কয়েক মাস পর আমদানি করার জন্য যে টাকা রিজার্ভে দরকার সেই টাকাও থাকবে না। রিজার্ভ একদম নিচে নেমে যাবে।'

'এটা আমি বলছি না, আওয়ামী ঘরানার যে বড় বড় অর্থনীতিবিদ আছেন তারা বলতে শুরু করেছেন, ভয়ংকর অবস্থা। এটা যদি ঠিক না করা যায়, অবিলম্বে যদি ব্যবস্থা না যায়, ভয়াবহ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার খেসারত দিতে হবে', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'যারা সরকারে আছে তাদের জনগণের প্রতি কোনো মায়া নেই, কোনো দরদ নেই, তাদের কোনো একাউন্টেবিলিটি নেই, তাদের কোথাও জবাবদিহি করতে হয় না। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, আমদানি করবে, যত খুশি চুরি করবে, তাদের প্রশ্নও করা যায় না। তাদেরকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে।'

'রূপপুরে পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্ট করেছে। অন্যান্য দেশে এ ধরনের প্লান্টে যে খরচ হয়েছে, তার থেকে চারগুণ বেশি পয়সা দিয়ে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম কেনা হয়েছে। কারণ কি? এই যে চারগুণ বেশি খরচ তার থেকে ভাগাভাগি হয়ে যাবে, ওদের কমিশন ওরা নিয়ে যাবে। পদ্মা সেতু করেছে ভালো কথা। সেখানে খরচ সর্বোচ্চ যা হওয়ার কথা তার চেয়ে চারগুণ বেশি পয়সা দিয়ে করা হলো। এখন সেতুর ওপর রেললাইন করা হয়েছে… আজকে উদ্বোধন হয়েছে। কত টাকায় এটা করেছেন- বলেন? এগুলো বললে ওদের মাথা খারাপ হয়ে যায়।'

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে 'গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও রোহিঙ্গা সংকট: শহীদ আবরার ফাহাদের প্রেরণা' শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান, কেন্দ্রীয় নেতা মিয়া মশিউজ্জামান, তারেক রহমান, ইসমাইল মণ্ডল ও শিরিন আখতার শিরিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

15pc VAT on Metro Rail: Quader requests PM to reconsider NBR’s decision

Dhaka is one of the most unliveable cities in the world, which does not go hand-in-hand with the progress made by the country, says the road transport and bridges minister

1h ago