বিএনপি গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের শত্রু: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি কালো পতাকা কর্মসূচির নামে আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জানান দিচ্ছে। দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ কোনো অপশক্তিকে সহ্য করবে না।
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি কালো পতাকা কর্মসূচির নামে আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জানান দিচ্ছে। দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ কোনো অপশক্তিকে সহ্য করবে না।

আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কালো পতাকা কর্মসূচির নামে আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জানান দিচ্ছে বিএনপি। তাদের কালো পতাকা মিছিলের কোনো অনুমতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেয়নি, তাই বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে। এই অপশক্তিকে আমরা প্রতিহত করব। এরা গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের শত্রু। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস গিলে ফেলে বিএনপি, তবে শেষ বিচারে তারা সফল হয়নি।'

তিনি বলেন, 'শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা পাশাপাশি কর্মসূচি করেছি, কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপি প্রকাশ্যে পুলিশ হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসা, হাসপাতাল এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে, যা দেশবাসী এখনো ভোলেনি। আমরা আক্রান্ত হয়েও আক্রমণ করিনি, তবে দেশের স্বার্থে আমরা কোনো অপশক্তিকে সহ্য করব না।'

বিএনপির হুমকি-ধামকিতে কারো কোনো ভ্রুপেক্ষ নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। রাজপথের বিষয়ে জবাব রাজপথে দেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস ডিঙিয়ে বিএনপি যে বিকৃত তথ্য বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর অপপ্রচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল তাদের সে অপচেষ্টা সফল হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং জাতীয় পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের বিদেশে সসম্মানে উচ্চারিত একটি নাম।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খানকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মঈন খান সাহেবদের দল ৭৫'র বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে তারপর ৩ নভেম্বর, একুশে আগস্টে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে হামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার, আল বদরের দল। গর্হিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য জাতির কাছে মঈন খানকে ক্ষমা চাইতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মঈন খান ও তার দলের লোকজন কোথায় ছিল প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়া পাকিস্তানি চর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল কি না সেটাই আজকে প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রথম সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করতেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি প্রমাণ করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে এই দল। বিএনপি এখনো সেই লিগ্যাসি বহন করে চলছে।

সংসদের প্রধান চ্যালেঞ্জ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। বাজার নিয়ন্ত্রণ এ বিষয়টা চ্যালেঞ্জ। সংসদে যারা তারা জনগণের প্রতিনিধি। এ সমস্যাগুলো এখন জনগণের নিত্যদিনের সমস্যা, কাজেই প্রথম চ্যালেঞ্জ এখন এটাই।

ব্যবসায়ীরা কথা রাখবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যবসায়ীরা কথা রাখবে, মিষ্টি কথায় তো চিড়া ভিজে না। কথা যেভাবে বলতে হয় সেভাবেই বলতে হবে আমাদের। যে অ্যাকশনের দরকার সে অ্যাকশন নিতে হবে। শুধু হুমকি ধমকি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে অ্যাকশন নিতে হবে, কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কারণ আমাদের দেশের যে বাস্তবতা, সবকিছু ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করা যায় না। কিছু কিছু কৌশলেও যেতে হবে এবং সেটা উপলব্ধি করতে হবে। কথায় কথায় কাউকে ধমক দিলে সমস্যা সমাধান হবে না। আমাদের পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে দলীয় প্রতীক সরিয়ে দেওয়া এটা কি দলীয় কোন্দল নিরসনের জন্য নাকি যারা বিএনপির নির্বাচনে আসতে পারেনি তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি যদি বলি কোন্দল নিরসনের জন্য আমাদের কৌশল নিতে হয়েছে। ইলেকশনে আমরা কৌশল নিয়েছি স্বতন্ত্রদের ইলেকশন করতে দিয়েছি। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিল তারা নির্বাচন করেছে। সে কৌশলের তো বিজয় হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপ-দপ্তর সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Unrest emerges as a new threat to RMG recovery

The number of apparel work orders received by Bangladeshi companies from international retailers and brands for the autumn and winter seasons of 2025 dropped by nearly 10 percent compared to the past due to major shocks from the nationwide student movement and labour unrest in major industrial belts over the past two and half months.

9h ago