জব্বারের বলীখেলার জন্য প্রস্তুত লালদীঘি ময়দান

চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে জব্বারের বলি খেলার মঞ্চ। ছবি: স্টার

জব্বারের বলীখেলা আয়োজনের জন্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। ঈদুল ফিতরের ঠিক পরেই ২৫ এপ্রিল ঐতিহাসিক খেলার ১১৪তম সংস্করণের আয়োজন হবে।

আয়োজকরা জানান, লালদীঘি ময়দানে তৈরি করা হয়েছে বলীখেলার মূল মঞ্চ। এর মধ্যেই থিম সং উদ্বোধন করা হয়েছে। বলীখেলার সঙ্গে তিন দিনের মেলা হবে। মেলার তৃতীয় ও শেষ দিনে হবে চাটগাঁইয়া উৎসব।

প্রতি বছর ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে বলীখেলার আয়োজন করা হয়। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে বলীখেলা ও মেলা হয়নি।

লালদীঘি ময়দানের আশপাশের রাস্তার ধারে বৈশাখী মেলা শুরু হবে ২৪ এপ্রিল। মেলায় হস্তশিল্প ও স্থানীয়ভাবে তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্রের পাশাপাশি খাবার সামগ্রীও পাওয়া যায়। বলীখেলার দর্শকরা বাড়ি ফেরার সময় এসব জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান। এছাড়া মেলায় হস্তশিল্প ও অন্যান্য সামগ্রীও বিক্রি হয়।

বুধবার জব্বারের বলীখেলার ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। ট্রফি উন্মোচন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়র এই আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক।

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এ বছর দুই শতাধিক কুস্তিগির প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য চাটগাঁইয়া উৎসবে তুলে ধরা হবে। এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা করা হবে।

কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান চৌধুরী ফরিদ বলেন, ঈদুল ফিতরের পরপরই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে বলে স্থানীয় জনগণের উৎসব আরও রঙিন করবে।

জব্বারের বলীখেলার ইতিহাস

১৯০৯ সালে বকশিরহাটের স্থানীয় ধনী বণিক বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জব্বার সওদাগর এই কুস্তি প্রতিযোগিতার সূচনা করেন। জানা যায়, এই ব্যবসায়ীর শুধু কুস্তির প্রতি ভালোবাসা ছিল না বরং তার মধ্যে ছিল দেশের প্রতি ভালোবাসা। ওই সময়টায় ভারতে ব্রিটিশ শাসনে অবসানে চট্টগ্রামে দানা বাঁধছিল আন্দোলন।

পরে তার নাম অনুসারেই এই আয়োজনের নামকরণ হয়েছে।

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে বণিক আব্দুল জব্বার স্থানীয় যুবকদের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে শারীরিকভাবে উপযুক্ত করে তুলতে চেয়েছিলেন।

আয়োজক কমিটির সেক্রেটারি ও প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল জব্বারের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, 'আমার দাদা এই আয়োজনের সূচনা করলেও এটা এখন আর পারিবারিক ঐতিহ্য নয়। এটা চট্টগ্রামের সকল মানুষের এবং তারা এই অনুষ্ঠানকে বাঁচিয়ে রেখেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

'Rab destroyed secret detention centres post August 5'

Finds Commission of Inquiry on Enforced Disappearances

1h ago