ডাইনিদের বাহন কেন ঝাড়ু?

গল্প, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, কার্টুনে আমরা দেখি ডাইনিদের রাতের বেলায় ঝাঁড়ুতে করে উড়ে বেড়াতে। কিন্তু এত কিছু থাকতে ঝাঁড়ুই কেন? এর উত্তরে পাওয়া গেছে বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা। 
ডাইনিদের বাহন কেন ঝাড়ু?
ঝাঁড়ুতে চড়ে উড়ে চলেছে ডাইনি। ছবি: সংগৃহীত

গল্প, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, কার্টুনে আমরা দেখি ডাইনিদের রাতের বেলায় ঝাঁড়ুতে করে উড়ে বেড়াতে। কিন্তু এত কিছু থাকতে ঝাঁড়ুই কেন? এর উত্তরে পাওয়া গেছে বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা। 

ঝাঁড়ুকে ইংরেজিতে বলা হয় 'ব্রুম' যা মূলত একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদিশব্দ আবার 'বেসম' যা স্কটল্যান্ডের অপরিচ্ছন্ন নারীদের বোঝানো হতো। ১৪৫১ সালে মার্টিন লে ফ্র‍্যাঙ্কয়ের 'লে চ্যাম্পিয়ন দেস ডেমস' (দ্য ডিফেন্ডার অব লেডিস) বইয়ে সর্বপ্রথম ঝাঁটা ও কাঠে চড়া হেডস্কার্ফে দুজন নারীকে দেখা যায়। এরা ছিলেন 'ওয়াল্ডেনসিয়ানস'। এই সম্প্রদায় নারীদের যাজক হবার অনুমতি দেওয়ায়, ক্যাথলিক চার্চ তাদের পথভ্রষ্ট আখ্যায়িত করে। 

এ ছাড়া চার্চের ক্ষমতাতন্ত্রকে প্রশ্ন করার ফলে অনেক নারীই ডাইনি আখ্যায়িত হন। সে সময় কোনো নারী বাড়ির বাইরে গেলে দরজায় বা চিমনির ওপর ঝাঁড়ু উঁচিয়ে রেখে যেতেন। 'অবাধ্য' নারীদের ডাইনি বলার সঙ্গে ঘর পরিপাটি করে রাখা ঝাঁড়ুর সম্পর্ক আছে বলে ধরা হয়। কারণ, যে ঘর যত পরিচ্ছন্ন, সেই ঘরের বউ তত লক্ষ্মী মনে করা হতো। আর পুরুষের যেমন থাকে কুঠার/কাস্তে, নারীদের কাজের হাতিয়ার ধরা হতো তেমনি ঝাড়ুকে। ঝাঁড়ু নিয়ে উড়ে বেড়ানো অর্থ সেই নারী ঘরের কাজে মনোযোগী নয়, সংসারের পক্ষে অলক্ষ্মী ও অপয়া। 

তবে নৃতাত্ত্বিক রবিন স্কেলটনের মতে, পৌত্তলিক আচার থেকে এই ব্যাপারটি এসেছে। গ্রামের কৃষকেরা জমির ধারে, খোলা মাঠে বা আইলে পূর্ণিমা রাতে ঝাঁড়ু উঁচিয়ে ধরে নাচতেন। ঝাঁড়ুনৃত্যের ফলে ফসল ভালো হবে বলে মনে করা হতো। ১৫৮৪ সালে রেজিনাল্ড স্কট তার 'ডিসকভারিস অব উইচক্রাফট' বইয়েও কাছাকাছি ধরনের কথাই উল্লেখ করেছিলেন। 

আবার, এর পেছনে অনেকে হ্যালুসিনোজেনিক ড্রাগের প্রভাবের কথাও উল্লেখ করেছেন। ফার্মাকোলজিস্ট ডেভিড ক্রলের মতে, বেলাডোনা, হেনবেন, ম্যানড্রেক ও ধুতুরার মতো উদ্ভিদগুলোয় থাকা ট্রোপান এলকালয়েড এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতো। 

জন মান তার 'মার্ডার, ম্যাজিক অ্যান্ড মেডিসিন' বইয়ে ১৫ শতকের ধর্মতত্ত্ববিদ জর্ডানেস ডি বারগেমোর বরাতে উল্লেখ করেছেন, এই উদ্ভিদগুলোর নির্যাস সেসব নিষিদ্ধ কাজে যুক্ত থাকা নারীরা ত্বকে মাখতো। বিশেষত মলাশয় ও জরায়ুর মতো গোপন স্থানে। এসবের প্রভাবে তাদের মতিভ্রম হতো, ঘোরের ভেতর দেখতো পূর্ণিমা রাতে উল্টো ধরা ঝাঁড়ুতে বসে উড়ে বেড়াচ্ছে তারা, সাঁই সাঁই করে বাতাস কেটে ছুটে চলেছে গন্তব্য অভিমুখে।

 

রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট অবলম্বনে 

 

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago