তাহলে কি ভুল নিয়মে উনো খেলেছি

উনোর কার্ড। ছবি: উইকিমিডিয়া

পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কার্ড গেমগুলোর মধ্যে উনো অন্যতম। বাংলাদেশে এই খেলাটি খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও শহরাঞ্চলে এটি বেশ প্রচলিত খেলা।

এই খেলায় একজন খেলোয়াড়কে হাতে থাকা কার্ডের রং অথবা সংখ্যা মেলাতে হয়। রং অথবা সংখ্যা মিলিয়ে খেলতে খেলতে যার হাতের কার্ড আগে শেষ হয়, তিনি হন বিজয়ী।

উনো খেলার নিয়ম নিয়ে প্রায়ই খেলোয়াড়দের মধ্যে ঝগড়া হয়। খেলার মাঝখানে ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় খেলা শুরুর আগেই একজন নিয়মগুলো সবার জন্য স্পষ্ট করে বলে দেন। কিন্তু বিভিন্ন নিয়মে খেলার কারণে অনেক সময় নিয়ম নিয়ে সবার সঙ্গে একমত হওয়া যায় না।

খেলা পরিচিতি

প্রতি ডেকে উনো কার্ডে মোট ১০৮টি কার্ড থাকে। শূন্য থেকে নয় পর্যন্ত প্রতিটি রঙের মোট ১৯টি করে কার্ড থাকে। প্রতিটি রঙের কার্ডে শুধু শূন্য ছাড়া বাকি কার্ডগুলোর প্রতিটির ২টি করে কার্ড থাকে। সংখ্যার কার্ডের বাইরে আরও ৫ ধরনের কার্ড আছে, যেগুলোকে বলা হয় পাওয়ার কার্ড।

একটি ডেকে মোট ৩২টি পাওয়ার কার্ড থাকে। প্লাস টু কার্ড (অথবা ড্র২ কার্ড), রিভার্স কার্ড ও স্কিপ কার্ডের প্রতিটি থাকে ৮টি করে, প্লাস ফোর কার্ড ও ওয়াইল্ড ড্র কার্ড থাকে ৪টি করে।

সর্বনিম্ন ২ জন থেকে সর্বোচ্চ ১০ জন একসঙ্গে এই খেলাটি খেলতে পারেন। খেলার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যার হাতের কার্ড সবার আগে শেষ হবে, তিনিই বিজয়ী। প্রতিজন খেলোয়াড় ৭টি করে কার্ড নিয়ে শুরু করবেন এবং অবশিষ্ট কার্ডগুলো মাঝখানে উল্টে রাখা হবে। সবার উপরের কার্ডটি ডিসপ্লে করে খেলা শুরু করা হবে। সেই কার্ডের রং বা সংখ্যা যাদের কার্ডের সঙ্গে মিলে যাবে, তারা একটি করে কার্ড চালতে পারবে। কিন্তু যদি ওই কার্ডের সঙ্গে কারও হাতের কার্ডের সঙ্গে কোনো মিল (রং বা সংখ্যার) না থাকে, তাহলে সামনে উল্টে রাখা কার্ডগুলো থেকে একটি করে কার্ড নিতে হবে।

এই খেলায় লক্ষ্য হচ্ছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাতের কার্ড শেষ করা।

পাওয়ার কার্ড

ওয়াইল্ড কার্ড: কোনো খেলোয়াড়ের হাতে যদি সংখ্যা বা রং মেলানোর মতো কোনো কার্ড না থাকে, তাহলে এই কার্ডটি দিয়ে তিনি পরবর্তী খেলোয়াড়কে যেকোনো একটি রঙের কার্ড চালার নির্দেশনা দিতে পারেন।

রিভার্স কার্ড: কোনো খেলোয়াড় যদি তার পরবর্তী খেলোয়াড়কে চাল দেওয়াতে না চান, তাহলে এই কার্ডটি খেলতে পারবেন। ডিসপ্লে কার্ডের রঙের সঙ্গে মিললেই কেবল এই কার্ডটি খেলা যাবে। এটি চাললে খেলা উল্টো দিকে ঘুরে যাবে।

স্কিপ কার্ড: কোনো খেলোয়াড় যদি তার পরবর্তী খেলোয়াড়কে ওই চালের জন্য খেলাতে না চান, তাহলে তিনি এই কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। এই কার্ড ব্যবহার করলে ঠিক পরেরজন কোনো কার্ড চালতে পারবেন না, যা শুধু ওই চক্রের জন্য প্রযোজ্য।

প্লাস টু ও প্লাস ফোর: কোনো খেলোয়াড় প্লাস টু কার্ড চাললে পরের খেলোয়াড়কে সামনে থাকা কার্ড থেকে অতিরিক্ত ২টি কার্ড নিতে হবে। প্লাস ফোর চাললে ৪টি কার্ড নিতে হবে।

প্লাস ফোর কার্ডটি একটি ওয়াইল্ড কার্ড। অর্থাৎ, হাতের কার্ডগুলো যদি ডিসপ্লে কার্ডের সঙ্গে সংখ্যা বা রঙে না মেলে, তাহলে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হচ্ছে, খেলোয়াড় যখন তার দ্বিতীয় শেষ কার্ডটি চালবেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে 'উনো' বলতে হবে। এটা না বললে ডিসপ্লে থেকে আরেকটি কার্ড নিতে হবে।

তাহলে ভুল কোথায়?

কেউ যদি প্লাস ফোর কার্ড চালেন এবং তার পরবর্তী খেলোয়াড় যদি প্লাস টু কার্ড চালেন, তাহলে এরপরের খেলোয়াড়কে মোট ৬টি কার্ড (৪+২) তুলতে হয় ডিসপ্লে থেকে।

অনেকেই হয়তো ভাবছেন, এটাই তো নিয়ম! কিন্তু না। এটি ভুল।

 

উনো কর্তৃপক্ষ টুইট করে সবার এই ভুল ভাঙিয়ে দিয়েছে। সঠিক নিয়মটি হচ্ছে, কেউ যদি প্লাস ফোর কার্ডটি খেলেন, তাহলে পরবর্তী খেলোয়াড়ের জন্য কার্ড খেলার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তাকে বাধ্য হয়ে ডিসপ্লে থেকে ৪টি কার্ড তুলতে হবে। তিনি আবার প্লাস টু বা কোনো ওয়াইল্ড কার্ড খেলতে পারবেন না।

একইভাবে প্লাস ফোর কার্ড খেললে পরবর্তী খেলোয়াড় আবার প্লাস টু কার্ড দিয়ে তার পরেরজনকে ৬টি কার্ড চাপিয়ে দিতে পারবেন না।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank governor Ahsan H Mansur's remarks

Bangladesh in ‘intensive discussion’ with UK to recover laundered money: BB governor

Mansur said Bangladesh had requested mutual legal assistance from several countries, including the UK

2h ago