ইসরাইলের মতো ফিলিস্তিনেরও রাষ্ট্র গঠনের অধিকার আছে: চীনা রাষ্ট্রদূত

ছবি: চীন দূতাবাসের সৌজন্যে

ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে চীন।

আজ রোববার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।'

চলমান সংঘাতের বিষয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধের জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা করতে হবে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া থামাতে হবে এবং পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয় এ ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা এখন শীর্ষ অগ্রাধিকার বলে চীন বিশ্বাস করে।

আন্তর্জাতিক আইন মেনে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার ও সহায়তার পথ খুলে দেওয়া এবং গুরুতর মানবিক বিপর্যয় রোধ করা অপরিহার্য।

সংঘাত প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে শান্ত থাকার ও সংযম প্রদর্শন, ন্যায্য অবস্থান নিয়ে সংঘাত কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে আরও বড় আঘাত এড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

চীন বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সমস্ত সহিংসতা ও হামলার নিন্দা জানায় এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এমন সব কাজের বিরোধিতা করে বলে জানান তিনি।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, শক্তির নির্বিচার ব্যবহার অগ্রহণযোগ্য এবং ফিলিস্তিনি বা ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। জাতিসংঘের কর্মীসহ অন্যান্য মানবিক সংস্থার কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে চীনা সরকারের বিশেষ দূত শিগগিরই ওই অঞ্চলে সফর করবেন। সহিংসতা বন্ধ ও পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাবেন।

শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং ফিলিস্তিন প্রশ্নের একটি ব্যাপক, ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় আরও বেশি কর্তৃত্বপূর্ণ, প্রভাবশালী ও বিস্তৃত ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে চীন।

রাষ্ট্রুদূত জানান, ফিলিস্তিনের প্রশ্নটি মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং এই ক্ষত আজকের বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ ফিলিস্তিনে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দীর্ঘ বিলম্ব ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি ঐতিহাসিক অবিচারের প্রতিকারে ব্যর্থতা।

তিনি বলেন, 'ইসরাইলের মতো ফিলিস্তিনেরও রাষ্ট্র গঠনের অধিকার আছে। ইসরায়েলিরা নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার চিন্তা কে করবে?'

'ইহুদি জাতি পৃথিবীতে এখন আর গৃহহীন নয়, কিন্তু ফিলিস্তিনি জাতি কবে ফিরবে তাদের ঘরে? বিশ্বে অনেক অন্যায় আছে, কিন্তু ফিলিস্তিনের প্রতি যে অবিচার তা অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এ দুর্ভোগ, যা চলতে দেওয়া যায় না', বলেন তিনি।

সমাধান হিসেবে দুই রাষ্ট্র ও একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কথা বলেন চীনের রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, 'এর মাধ্যমেই ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল শান্তিতে সহাবস্থান করতে পারে এবং আরব ও ইহুদিরা সম্প্রীতিতে বসবাস করতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshis worry amid US immigration crackdown

The United States has deported at least 31 Bangladeshis after President Donald Trump took a tough immigration policy.

5h ago