এবার গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম আল-কুদস হাসপাতালে হামলা করতে চায় ইসরায়েল
ইসরায়েল গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতাল আল-কুদস খালি করার নির্দেশ দেওয়ার পর সেখানকার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে যে এই নির্দেশ মানা সম্ভব নয়।
সংস্থাটি জানিয়েছে যে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) অনেক রোগী আছেন। অনেক শিশুকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। তাদেরকে কোনভাবেই স্থানান্তর করা সম্ভব নয়।
আজ সোমবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়াও আল-কুদস হাসপাতাল ও সংলগ্ন এলাকায় গাজার প্রায় ১৪ হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল হাসপাতালের আশেপাশের এলাকায় দিনভর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি 'বেশ কয়েক ডজন হামাস যোদ্ধা' হত্যার দাবি করেছে।
বিবিসির সাংবাদিকরা সেই হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের কাছ থেকে খুদে বার্তা পান। সেখানে তিনি বলেন, 'আল-কুদস হাসপাতালের আশপাশের এলাকায় ভারী বোমাবর্ষণ শুরু হয়েছে।'
'সবাই, বিশেষ করে শিশুরা, অনেক ভয় পেয়েছে। তারা হাসপাতালের পেছন দিকে উঁচু আবাসিক ভবনগুলোর ওপর বোমাবর্ষণ করছে,' যোগ করেন তিনি।
বিবিসি এর আগে গাজার অপর এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দার কাছ থেকে ভয়েস মেসেজ পায়। সেখানে তিনি বলেন, 'তারা দুইটি আবাসিক টাওয়ারে বোমা ফেলেছে। এখন তৃতীয়টিতে বোমাবর্ষণ চলছে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করুন।'
হাসপাতালের ভেতর থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকটি কক্ষ ধুলো ভরে গেছে। জানালাগুলো বিস্ফোরণের শব্দে ভেঙে পড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ সতর্ক করেন, ইসরায়েল যদি গাজার আল-কুদস হাসপাতালে হামলা চালায়, তাহলে সেটা মানবিক আইনের লঙ্ঘন হবে এবং এ জন্য তাদেরকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হতে পারে।
রথ আল জাজিরাকে বলেন, 'হাসপাতালে ১৪ হাজার মানুষ আছে, যাদের অনেকেই আশংকাজনক অবস্থায় আছে এবং তাদেরকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। এ সময় এ ধরনের নির্দেশ অবাস্তব।'
'হাসপাতালের নিচে হামাসের অবকাঠামো থাকলেও এ ধরনের হামলা থেকে যতটুকু সামরিক সুবিধা পাওয়া সম্ভব, তার চেয়ে বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হবে। যা যৌক্তিক নয়', যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, হামাস হয়তো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যুদ্ধাপরাধ করেছে, কিন্তু তার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজার ওপর নির্বিচার বোমাবর্ষণ যুক্তিপূর্ণ নয়।
'আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মতে, এক পক্ষ যুদ্ধাপরাধ করার মানে এই নয় যে অন্য পক্ষও সেটা করতে পারবে। উভয় পক্ষকেই আলাদা আলাদা ভাবে যুদ্ধের নীতি মানতে হবে', যোগ করেন রথ।
Comments