গাজায় ইসরায়েলের সহিংস হামলা, নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছাড়াল ১৬ হাজার

ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের স্থলবাহিনী মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে পৌঁছে শহরটিকে ঘিরে ‘হামাসের’ বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। সঙ্গে বিমানবাহিনীও হামলায় যোগ দেয়।
দক্ষিণ গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি কামান। ছবি: রয়টার্স
দক্ষিণ গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি কামান। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ গাজার মূল শহর খান ইউনিসে তীব্র বোমাবর্ষণ ও স্থল হামলা চালিয়েছে। তাদের ভাষায়, পাঁচ সপ্তাহ আগে হামাসকে নির্মূলের অভিযান শুরুর পর গাজা উপত্যকায় এটাই সবচেয়ে বড় আকারের হামলা।

আজ বুধবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের স্থলবাহিনী মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে পৌঁছে শহরটিকে ঘিরে 'হামাসের' বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। সঙ্গে বিমানবাহিনীও হামলায় যোগ দেয়।

হামাসের সশস্ত্র উইং আল কাসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ডের প্রধান জেনারেল ইয়ারন ফিঙ্কেলমান এক বিবৃতিতে বলেন, 'স্থল অভিযান শুরুর পর এ মুহূর্তে সবচেয়ে তীব্র লড়াই চলছে।'

খান ইউনিস ছাড়াও ইসরায়েলি বাহিনী এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির জাবালিয়াতেও হামলা চালায়। গত সপ্তাহে দুই পক্ষের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই বড় আকারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

ফিঙ্কেলমান আরও জানান, উত্তরে গাজা শহরের পাশে হামাস নিয়ন্ত্রিত অবস্থানে এবং পূর্বে শুজাইইয়াতেও দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে।

আল কাসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, তারা মঙ্গলবার ৮ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে এবং ২৪টি সামরিক পরিবহণ ধ্বংস করেছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার দুই সেনা নিহতের কথা উল্লেখ করা হয়। সার্বিকভাবে অভিযান শুরুর পর থেকে ৮৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

খান ইউনিসের উত্তরে দেইর-আল-বালাহ এলাকার আবাসিক অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৫ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শুহাদা আল-আকসা হাসপাতালের প্রধান ড. এয়াদ আল-জাবরি। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক ব্যক্তি।

তবে রয়টার্স এই তথ্য যাচাই করতে পারেনি।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৪০ জন। ইসরায়েল দাবি করছে, এখনো হামাসের কাছে ১৩৬ জন জিম্মি আটক আছেন।

এ ঘটনার পর হামাসকে নির্মূলের অঙ্গীকার করে ইসরায়েল। এই লক্ষ্যে গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই মাস ধরে নির্বিচার স্থল ও বিমানহামলা চালায় ইসরায়েল। এর পর কাতারের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও গত শুক্রবার এর মেয়াদ শেষ হয়।

সাত দিনের এই যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় নতুন করে সহিংসতা দেখা দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির মাঝে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস।

হামাস মঙ্গলবার জানায়, এই নির্বিচার হামলায় ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৪৮ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু ও ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। আরও হাজারো মানুষ নিখোঁজ ও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

এই সংখ্যাগুলো গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করেনি।

Comments

The Daily Star  | English

LPG tanker in Chattogram still burning after 13 hours

9-member probe body formed by Chittagong Port Authority

5h ago