গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়েছে গাজার আল শিফা হাসপাতালের বেশিরভাগ অংশ। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়েছে গাজার আল শিফা হাসপাতালের বেশিরভাগ অংশ। ছবি: রয়টার্স

এ সপ্তাহের শুরু থেকেই কায়রোতে চলছে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা। মিশরের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের চুক্তির আলোচনায় 'উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি' দেখা গেছে।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

ইসরায়েল এখনো গাজায় চাপ অব্যাহত রেখেছে। দেশটি আবারও জানিয়েছে, তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় স্থল হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

রোববার হঠাত করেই দক্ষিণ গাজা উপত্যকা ও মূল শহর খান ইউনিস থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করে ইসরায়েল। যার ফলে, অসংখ্য বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তাদের নিজ আবাসস্থলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পান।

ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিস ছেড়ে যাওয়ার পর গাজাবাসীরা সেখানে ফিরতে শুরু করেছেন। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি বাহিনী খান ইউনিস ছেড়ে যাওয়ার পর গাজাবাসীরা সেখানে ফিরতে শুরু করেছেন। ছবি: রয়টার্স

তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইউভ গ্যালান্ট জোর দিয়ে বলেছেন, খান ইউনিস থেকে সেনা সরানোর বিষয়টি যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত নয়।  তিনি বলেন, এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে 'ভবিষ্যৎ অভিযানের প্রস্তুতির জন্য, যার মধ্যে রাফাও অন্তর্ভুক্ত।'

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাত মাসে পা দেওয়া এই যুদ্ধের বিষয়ে মন্তব্য করেন, ইসরায়েল 'বিজয় থেকে এক ধাপ পেছনে আছে।'

তবে শান্তি আলোচনা শুরু পর তিনি তার মন্ত্রিসভাকে জানান, 'ইসরায়েল চুক্তির জন্য প্রস্তুত'।

'তবে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে যুদ্ধে বিরতিও দেওয়া হবে না', যোগ করেন তিনি।

ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই সংঘাত নিরসনে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ রয়েছে। এই যুদ্ধের ফলে অসংখ্য বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

এমন কী ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র ও প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রও গত সপ্তাহে যুদ্ধবিরতির ও জিম্মি মুক্তির চুক্তির দাবি করেছে। সঙ্গে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বাড়াতেও অনুরোধ জানায় যুক্তরাষ্ট্র। বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখতে না পারলে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন নীতিমালার পরিবর্তন হতে পারে, এমন হুমকিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

এক অজ্ঞাতনামা উচ্চপদস্থ মিশরীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মিশরের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আল-কাহেরা জানিয়েছে, 'চুক্তির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।'

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতার ও হামাসের প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে কায়রো ছেড়ে গেছেন।

'তারা দুই দিনের মধ্যে আবারও ফিরে এসে চুক্তির শর্তগুলো চূড়ান্ত করবেন।'

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিরাও আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মিশরের রাজধানী ছেড়ে যাবেন। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় নেবেন।

গাজায় প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছবি: রয়টার্স
গাজায় প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ছবি: রয়টার্স

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত ও নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৬০ জন নিহত হন এবং হামাসের ও ইসলামিক জিহাদের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫০ জন মানুষ। জিম্মিদের মধ্যে ১২৯ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজায় প্রায় ছয় মাস ধরে সর্বাত্মক ও নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৩ হাজার ১৭৫ জন মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রোববার জানিয়েছে, গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে মোট ২৬০ সেনা হারিয়েছে দেশটি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi Migrant Workers Deaths Over The Years

In coffins, from faraway lands

Kazi Salauddin, a 44-year-old man from Cumilla, migrated to Saudi Arabia in October 2022, hoping to secure a bright future for his family. But barely a year later, Salauddin, the father of two daughters and a son, died suddenly.

9h ago