সুদানে সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮৫

খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টারমাক থেকে ধোঁয়া উড়ছে। ছবি: রয়টার্স
খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টারমাক থেকে ধোঁয়া উড়ছে। ছবি: রয়টার্স

সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮৫ হয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি।

গতকাল সোমবার জাতিসংঘের প্রতিনিধি ভলকার পারথেসের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা—সুদানের সামরিক বাহিনীর ২ সংস্থার মধ্যে চলমান সংঘর্ষে দেশটিতে বেসামরিক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসার আশা সুদূর পরাহত হয়েছে এবং আরও বড় আকারে সংঘাত ছড়িয়ে যেতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টানা ৩ দিনের সংঘাতে রাজধানী খার্তুম ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। দিনভর বিমান হামলা, কামানের গোলা ও বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিনিধি পারথেস ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বলেন, 'যুদ্ধে জড়িয়ে থাকা ২ পক্ষের শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।'

তিনি জানান, উভয় পক্ষ মানবিক কারণে ৩ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।

২০১৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাতের পর ও ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানে ক্ষমতায় আসেন সেনা প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নেন আরএসএফের নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেতি নামে বেশি পরিচিত।

সম্প্রতি তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মৈত্রীতে ফাটল ধরে। আলোচনার মাধ্যমে আরএসএফকে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করে দেশে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছিল। মূলত এ থেকেই ২ সামরিক নেতার মতভেদের শুরু।

সুদানের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, মতভেদের মূলে আছে ২ বাহিনীর একীভূতকরণের সময়সীমা, ভবিষ্যতে সাবেক আরএসএফ কর্মকর্তাদের একীভূত বাহিনীতে পদমর্যাদা কী হবে, সে নিয়ে উদ্বেগ এবং আরএসএফের সদস্যরা কী সেনাপ্রধানের আওতায় থাকবেন, না কমান্ডার-ইন-চিফের (বুরহান) আওতায় থাকবেন, সে বিষয়ে দ্বিধা।

র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) প্রধান হামদান দাগালো (বাঁয়ে) এবং সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ফাইল ছবি: এএফপি
র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) প্রধান হামদান দাগালো (বাঁয়ে) এবং সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ফাইল ছবি: এএফপি

মিশর ও আরব আমিরাত সুদানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করছে বলে মিশরের সূত্ররা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কায়রো বুরহানের নেতৃত্বাধীন সুদানের সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন জানিয়েছে। অপরদিকে, আরব আমিরাত ও রাশিয়ার কাছ থেকে সমর্থন পাচ্ছেন দাগালো।

গতকাল সোমবার বুরহান আরএসএফকে 'বিদ্রোহী সংগঠন' হিসেবে অভিহিত করে সংস্থাটি বিলুপ্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বুরহান জানিয়েছেন, তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কম্পাউন্ডে প্রেসিডেন্টের গেস্টহাউজে নিরাপদে আছেন।

আরএসএফ নেতা দাগালো সেনাপ্রধানকে 'উগ্র ইসলামপন্থি মৌলবাদী' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, 'তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর আকাশ থেকে বোমা ছুঁড়ছেন।'

সেনাবাহিনী আকারে বড় এবং তাদের কাছে যুদ্ধবিমান আছে। তবে আরএসএফ'র সদস্যদের খার্তুম ও অন্যান্য শহরে মোতায়েন করা আছে। ফলে কোনো পক্ষেরই তাৎক্ষণিকভাবে এ যুদ্ধে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বুরহান ও দাগালোর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতির পথে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের দায়িত্ব হল 'বেসামরিক ব্যক্তি, কূটনৈতিক কর্মকর্তা ও মানবিক কাজে যুক্ত কর্মীদের নিরাপত্তা ও ভালো থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা।'

গতকাল খার্তুমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কার্যালয় ও তেলের পাম্প বন্ধ ছিল। চিকিৎসকরা জানান, বেশিরভাগ হাসপাতালেই সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

4h ago