স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজ

যুক্তরাজ্যের সুপ্রীম কোর্টের বাইরে স্কটল্যান্ডের পতাকা ঝুলিয়ে স্বাধীনতাকামী পক্ষ বিক্ষোভ করছে। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাজ্যের সুপ্রীম কোর্টের বাইরে স্কটল্যান্ডের পতাকা ঝুলিয়ে স্বাধীনতাকামী পক্ষ বিক্ষোভ করছে। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে স্কটল্যান্ড গণভোট আয়োজন করতে পারবে কি না- সে ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা।

যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আজ বুধবার এই সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

স্কটল্যান্ডের নেতা ও ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর গণভোটের আয়োজন করার আগ্রহের কথা জানান।

কিন্তু যুক্তরাজ্যের সরকার এ পর্যন্ত এই গণভোটের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিতে অস্বীকার করেছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট এ ধরনের গণভোটের আয়োজন করতে পারে কি না, সে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয় স্কটল্যান্ড।

আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে এই সিদ্ধান্ত জানা যাবে। যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যতের ওপর এই সিদ্ধান্তের বড় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

আদালতের সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর স্বাধীনতার পক্ষে স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে সমাবেশের আয়োজন করা হবে। নেতা নিকোলা স্টার্জন তার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন বলে সবাই প্রত্যাশা করছেন।

এর আগে ফার্স্ট মিনিস্টার জানান, তিনি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চান। ২০১৪ সালে সর্বশেষ গণভোটের সময় ২ সরকার সমঝোতায় পৌঁছেছিল। সেবারের গণভোটে স্কটল্যান্ডের ৫৫ শতাংশ মানুষ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেন। বাকি ৪৫ শতাংশ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেন।

স্টার্জন বলেন, এ ধরনের একটি সমঝোতা নিশ্চিত করবে গণভোটের ফলটি বৈধ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি যুক্তরাজ্যের সমালোচনা করে জানান, তারা গণভোটের বিরোধিতা করে গণতন্ত্রকে অসম্মান করছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে রিশি সুনাকসহ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা সকলেই যুক্তি দেন, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার চেয়ে এ মুহূর্তে জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ কমানো ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো জরুরি বিষয়গুলোকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ। ২০১৪ সালের গণভোটের ফলের প্রতি সবার সম্মান জানানো উচিৎ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালতের সিদ্ধান্ত যাই হোক, এ বিষয়টির রাতারাতি নিষ্পত্তি হচ্ছে না এবং একে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক চলতে থাকবে।

আদালতের রায় স্কটিশ সরকারের পক্ষে গেলে তারা নির্বিঘ্নে গণভোটের আয়োজন করতে পারবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাকের সঙ্গে বৈঠক করছেন নিকোলা স্টার্জন (বাঁয়ে) ও ওয়েলসের ফার্স্ট মিনিস্টার মার্ক ড্রেকফোর্ড। ছবি: রিশি সুনাকের টুইটার হ্যান্ডল থেকে নেওয়া
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাকের সঙ্গে বৈঠক করছেন নিকোলা স্টার্জন (বাঁয়ে) ও ওয়েলসের ফার্স্ট মিনিস্টার মার্ক ড্রেকফোর্ড। ছবি: রিশি সুনাকের টুইটার হ্যান্ডল থেকে নেওয়া

তবে স্বাধীনতা অর্জন করতে তাদেরকে ওয়েস্টমিনিস্টারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে গণভোটের ফলের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

তবে আদালতের সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের সরকারের পক্ষে গেলেও স্কটল্যান্ডের নেতা স্টার্জন হাল ছেড়ে দেবেন না। তিনি বিষয়টি ইতোমধ্যে পরিষ্কার করেছেন। তার মতে, আদালতের সিদ্ধান্ত বিপক্ষে যাওয়া স্কটিশ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে আরও একটি নতুন বাঁধা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি আশা করেন, গণভোটের মাধ্যমে নিজেদের মত প্রকাশ করার অনুমতি না পেলে সেটি এক ধরনের অবিচার হবে, এবং এর ফলে তিনি আরও বেশি জনসমর্থন অর্জন করতে পারবেন।

এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের কাছে উত্থাপন করেন স্কটল্যান্ড সরকারের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা লর্ড অ্যাডভোকেট ডরোথি বেইন কেসি।

ডরোথি বেইন কেসি জানান, বিষয়টি 'অতি মাত্রায় জনগুরুত্বপূর্ণ', এবং তিনি যুক্তরাজ্যের শীর্ষ আদালতকে এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।

গত মাসে আদালত ২ দিনের শুনানিতে যুক্তরাজ্য ও স্কটল্যান্ড সরকারের যুক্তি শুনেছেন। মাত্র ৬ সপ্তাহের মাঝে আজ তাদের সিদ্ধান্ত জানা যাবে। অনেক বিশেষজ্ঞ এত দ্রুত সিদ্ধান্ত আসার বিষয়টিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গেছে, এ মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে থাকার বিষয়টি নিয়ে স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা বেশ দ্বিধান্বিত অবস্থায় আছেন। ২০১৪ সালের মতো পক্ষে-বিপক্ষে ৫৫ ও ৪৫ শতাংশ জনমত থাকার বদলে খুব সামান্য ব্যবধানে 'যুক্তরাজ্যপন্থীরা' এগিয়ে আছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
price hike of essential commodities in Bangladesh

Essential commodities: Price spiral hits fixed-income families hard

Supply chain experts and consumer rights activists blame the absence of consistent market monitoring, dwindling supply of winter vegetables, and the end of VAT exemptions granted during Ramadan.

13h ago