টুইটারে ফেরার কোনো কারণ দেখি না: ট্রাম্প

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ফেরার কোনো ইচ্ছে নেই তার।
শুক্রবার ১৮ নভেম্বর মার-এ-লাগো তে বক্তব্য রাখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি
শুক্রবার ১৮ নভেম্বর মার-এ-লাগো তে বক্তব্য রাখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে ফেরার কোনো ইচ্ছে নেই তার।

গতকাল শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

টুইটারের নতুন স্বত্বাধিকারী ইলন মাস্ক এই প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট আবারও চালু করা উচিৎ কী না, এ প্রসঙ্গে একটি জরিপের আয়োজন করেন। জরিপে ১ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি লোক ভোট দেন। যেখানে ৫১ দশমিক ৮ ভোট অ্যাকাউন্ট চালুর পক্ষে পড়ে।

'জনগণ তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে', টুইটার বার্তায় বলেন ইলন মাস্ক।

এই ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধ হয়ে যাওয়া টুইটার অ্যাকাউন্টটি পুনরায় চালু হয়েছে। গতকাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্টের টুইটার অ্যাকাউন্ট সচল অবস্থায় দেখা গেছে

স্থগিত হওয়ার আগে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি ফলোয়ার ছিল। এ মুহূর্তে ফলোয়ারের সংখ্যা ৫ কোটি ৯০ লাখের মতো।

শনিবার মার্কিন স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে নতুন করে ১ লাখ ফলোয়ার যুক্ত হন। ২০২১ সালের ৮ জুন তার অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছিল।

ট্রাম্পের চালু হওয়া টুইটার অ্যাকাউন্ট। ছবি: টুইটার স্ক্রিণশট
ট্রাম্পের চালু হওয়া টুইটার অ্যাকাউন্ট। ছবি: টুইটার স্ক্রিণশট

তবে এ বিষয়ে ট্রাম্পকে খুব একটা উৎসাহী মনে হয়নি।

রিপাবলিকান দলের বার্ষিক বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি টুইটারে ফেরার পরিকল্পনা করছেন কী না? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, 'আমি কোনো কারণ দেখি না।'

তিনি জানান, তিনি তার নতুন প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালের সঙ্গেই থাকতেই বেশি আগ্রহী।

এই প্ল্যাটফর্ম ও অ্যাপটি তৈরি করেছে ট্রাম্প মিডিয়া ও প্রযুক্তি গ্রুপ (টিএমটিজি) নামে একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। ট্রাম্পের মতে, এই প্ল্যাটফর্মে টুইটারের চেয়ে ফলোয়ারদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার উন্নততর প্রক্রিয়া রয়েছে এবং এটি 'অসামান্য ফল' দেখাচ্ছে।

টুইটারের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো মন্তব্য করেনি।

মঙ্গলবার ট্রাম্প আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন। তিনি ইলন মাস্কের প্রশংসা করেন এবং জানান, তিনি তাকে সব সময়ই পছন্দ করে এসেছেন। তবে একইসঙ্গে টুইটার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্ল্যাটফর্মটি বট, ভুয়া অ্যাকাউন্টের সমস্যায় জর্জরিত এবং এতে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা 'অবিশ্বাস্য'।

মে মাসে প্রথমবারের মতো মাস্ক জানিয়েছিলেন তিনি ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে আগ্রহী।

‘জনগণ তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে’, টুইটার বার্তায় বলেন ইলন মাস্ক।
‘জনগণ তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে’, টুইটার বার্তায় বলেন ইলন মাস্ক।

তিনি একইসঙ্গে জানান, কোনো বাতিল করা অ্যাকাউন্ট আবারও চালু করার আগে টুইটার এ বিষয়ে একটি 'সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া' চালু করবে।

তবে ট্রাম্প ও কৌতুক অভিনেত্রী ক্যাথি গ্রিফিনের স্থগিত থাকা অ্যাকাউন্ট আবার চালু করা হলেও এ বিষয়ে নতুন কোনো প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

ট্রাম্প টুইটারে ফিরে এলে ট্রুথ সোশালের প্রতি তার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি অ্যাপলের অ্যাপস্টোরে ফেব্রুয়ারিতে ও গুগলের প্লেস্টোরে অক্টোবর মাসে যুক্ত হয়েছে। এ মুহূর্তে ট্রুথ সোশালে ট্রাম্পের প্রায় ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ফলোয়ার আছেন।

মে মাস থেকে নিয়মিত ট্রুথ সোশালে পোস্ট করছেন ট্রাম্প। এটাই এখন তার ফলোয়ারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মূল মাধ্যম। এই প্ল্যাটফর্মে তিনি তার মিত্রদের প্রচারণা, প্রতিপক্ষদের সমালোচনা ও নিজের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য পোস্ট করছেন।

ট্রুথ সোশালের সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি হচ্ছে, যেকোনো নতুন পোস্ট ৬ ঘণ্টার জন্য শুধু এই প্ল্যাটফর্মেই রাখতে পারবেন—অন্য কোথাও দিতে পারবেন না। তবে 'রাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক তহবিল গঠনের উদ্যোগ বা ভোট চাওয়া' সংক্রান্ত পোস্ট তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো প্ল্যাটফর্মে দিতে পারবেন।

Comments