মিশিগান প্রাইমারিতে জিতলেও বাইডেনের উদ্বেগ ‘আনকমিটেড’ ভোট

বাইডেন ও ট্রাম্প উভয়ই প্রাইমারিতে জিতবেন, এ বিষয়টি নিয়ে তেমন একটা সন্দেহ না থাকলেও বিশ্লেষকদের নজরে ছিল মঙ্গলবারের ভোট।
হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

মিশিগানের প্রাইমারিতে খুব সহজেই জয় পেয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী জো বাইডেন। তবে গাজায় ইসরায়েলকে সমর্থন জানানোর কারণে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ অনেক ভোটার 'আনকমিটেড' বা 'প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়' লেখা ঘরে ভোট দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

অপরদিকে, মিশিগান অঙ্গরাজ্যে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নিক্কি হ্যালিকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছেন রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

বাইডেন ও ট্রাম্প উভয়ই প্রাইমারিতে জিতবেন, এ বিষয়টি নিয়ে তেমন একটা সন্দেহ না থাকলেও বিশ্লেষকদের নজরে ছিল মঙ্গলবারের ভোট।

মিশিগানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক বসবাস করেন। স্বাধীন জরিপ মতে, এই জনগোষ্ঠী বাইডেন প্রশাসনের গাজা নীতিকে সমর্থন করেন না। ডেমোক্র্যাট পার্টির কয়েকজন নেতা ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ব্যালটে 'আনকমিটেড' লেখা ঘরে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

ডেমোক্র্যাটদের অর্ধেকেরও বেশি ভোট গণনার পর ৫৮ হাজার আনকমিটেড ভোট সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্টরা। গবেষণা প্রতিষ্ঠান এডিসন রিসার্চ জানিয়েছে, বিক্ষোভের আয়োজকদের প্রত্যাশার চেয়েও অন্তত ১০ হাজার ভোট বেশি পরেছে এই 'আনকমিটেড' বিকল্পে।

২০২০ সালের নির্বাচনে মিশিগানের আরব সম্প্রদায়ের অনেকে বাইডেনকে সমর্থন জানালেও তারা এখন ক্ষুব্ধ। অনেক প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটরাও মনে করেন ইসরায়েলি হামলায় গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর পেছনে বাইডেনের সমর্থনের বড় ভূমিকা রয়েছে।

'লিসেন টু মিশিগান' বিক্ষোভের আয়োজকরা এক বিবৃতিতে জানান, 'আমাদের এই উদ্যোগ সফল হয়েছে এবং আমরা আশাতীত সাড়া পেয়েছি। মিশিগানের হাজারো ডেমোক্র্যাট, যাদের অনেকেই ২০২০ সালে বাইডেনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তারা গাজার যুদ্ধের কারণে বাইডেনের পুনর্নিবাচনে অনীহা প্রকাশ করেছেন।'

মঙ্গলবার দিনের শেষে এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, 'আজ মিশিগানের সব মানুষ তাদের কণ্ঠস্বর সবার সামনে তুলে ধরেছেন। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ভোট দেওয়ার অধিকার অক্ষত রেখে, জনমানুষের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্র আজ এক মহান রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।'

আংশিক ফল প্রকাশের পর বলা যায়, ট্রাম্প ও বাইডেন উভয়ই নিরঙ্কুশ বিজয়ের দিকে আগাচ্ছেন।

নিউইয়র্কে জো বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
নিউইয়র্কে জো বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এডিসন রিসার্চের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় অর্ধেক ডেমোক্র্যাট ভোট গণনার পর বাইডেন ৮০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে 'আনকমিটেড' বিকল্পে। রিপাবলিকান ভোটের ৫৮ শতাংশ গণনা শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ট্রাম্প ৬৭ শতাংশ ও নিক্কি হ্যালি ২৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

মিশিগানের প্রাইমারিতে প্রায় সব সময়ই আনকমিটেড নামে একটি বিকল্প থাকে। এর মাধ্যমে দলের সমর্থকদের মধ্যে মনোনীত বা সম্ভাব্য প্রার্থীর জনপ্রিয়তা কেমন, তার একটি চিত্র পাওয়া যায়।

সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১২ সালে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচনে দাঁড়ানোর সময় মিশিগানে ২১ হাজার আনকমিটেড ভোটের মুখে পড়েন। সে তুলনায় বাইডেনের বিপক্ষে অনেক বেশি আনকমিটেড ভোট পড়েছে।

৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশিগান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

'সুইং স্টেট' নামে পরিচিত মিশিগান নির্বাচনের সার্বিক ফলাফলে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। ২০২০ এর নির্বাচনে মাত্র দুই দশমিক আট শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে এই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পকে হারান বাইডেন।

Comments