সপরিবারে সৌদি আরব ছেড়েছেন খাশোগির ছেলে

Salah Khashoggi
নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির ছেলে সালাহ খাশোগির (বামে) সঙ্গে করমর্দন করছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সৌদি প্রেস াজেন্সির সৌজন্যে

নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির ছেলে সালাহ খাশোগি যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক। সৌদি সরকার তার ওপর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে সালাহকে সপরিবারে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেয় সৌদি আরব। সেই প্রেক্ষিতে গত ২৪ অক্টোবর সৌদি ছাড়েন তিনি। পরদিন পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো আজ (২৬ অক্টোবর) জানায়, সালাহ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মা ও তিন সহোদরের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সালাহর পা রাখার কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের উপ-মুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো জানান, স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেও চলতি মাসে সৌদি নেতাদের ওপর চাপ দেন তাদের নাগরিক সালাহ খাশোগিকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে।

এদিকে, সালাহকে মুক্তি দেওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। উপ-মুখপাত্র পালাদিনো বলেন, “এমন পদক্ষেপে আমরা খুশি।” সে সঙ্গে তিনি গত ২ অক্টোবর ইস্তান্বুলে সৌদি কনসুলেটে জামাল খাশোগির নিহত হওয়া সংক্রান্ত সব তথ্য হাতে পাওয়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাজ করে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার কথাও জানান পালাদিনো।

খাশোগির হত্যা পরিকল্পিত

ক্রমাগত নিজেদের দাবি শুধরে নিচ্ছে সৌদি আরব। দেশটির সরকার আগে বলেছিলো- কনসুলেটের ভেতরে ‘হাতাহাতি’-র ফলে ওয়াশিংটন পোস্টের লেখক এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক খাশোগির মৃত্যু হয়েছে।

তবে গতকাল দেশটির সরকারি কৌঁসুলি বলেন, জামাল খাশোগির মৃত্যু পরিকল্পিত।

এদিকে, সালাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা রিয়াদের ইয়ামামা রাজপ্রাসাদে সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজের সঙ্গে দেখা করেন। সেসময় তার বাবার মৃত্যুতে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন। সৌদি প্রেস এজেন্সির দেওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, সালাহর সঙ্গে যুবরাজ করমর্দন করছেন। আর সালাহ শীতল চোখে যুবরাজের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।

যুবরাজকে দুষছে তুরস্ক

তুরস্কের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের দেশে সাংবাদিক খাশোগির মৃত্যুর জন্যে সৌদি যুবরাজকে দুষছেন। তাদের মতে, যুবরাজের নির্দেশেই এই সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, তুরস্কের এমন দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন আইনপ্রণেতাও।

ট্রাম্পকে অবহিত করলেন সিআইএ-র পরিচালক

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র পরিচালক গিনা হাসপেল তুরস্ক থেকে ফিরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানালেন খাশোগি হত্যার বিষয়ে কী কী সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে সে দেশটির হাতে।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার এক বার্তায় জানান, “রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প পরিচালক হাসপেলের কাছে থেকে বিষয়গুলো জেনেছেন। তুরস্কে সফরের সময় খাশোগির হত্যার বিষয়ে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলোই তিনি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছেন।”

সেসময় স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেও উপস্থিত ছিলেন বলেও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, তুরস্ক খাশোগি হত্যার সময়ের অডিও রেকর্ড সিআইএ-র পরিচালককে শুনিয়েছে।

আল জাজিরার মন্তব্য, যেহেতু খাশোগির হত্যার বিষয়ে সব তথ্য ট্রাম্প হাতে চেয়েছেন সেহেতু ট্রাম্প-হাসপেলের বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।

উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর ইস্তান্বুলে সৌদি কনসুলেটে ব্যক্তিগত কাজের জন্যে এসে নিখোঁজ হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সেসময় তার মৃত্যুর খবরটি প্রচারিত হতে থাকে। ঘটনার ১৮ দিন পর সৌদি সরকার খাশোগির নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

4h ago