বাড়তি টোলের বিড়ম্বনা

toll hike clash
২৬ অক্টোবর ২০১৮, রাজধানীর প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতুতে টোল বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয়রা ঢাকা-মাওয়া সড়ক অবরোধ করেন। ছবি: প্রবীর দাশ

ঢাকার হাসনাবাদ এলাকায় প্রথম বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সেতুর (বুড়িগঙ্গা-১) টোল বাড়ানোর প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিক এবং স্থানীয়দের বিক্ষোভে গতকাল (২৬ অক্টোবর) পুলিশ গুলি চালালে এক ট্রাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে ট্রাকচালক ও শ্রমিকদের সংঘর্ষ চলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। এতে অন্তত একশ মানুষ এবং ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ঘটনাস্থল থেকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল হাওলাদার (২৫) নামে গুলিবিদ্ধ একজনকে ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ সূত্রে জানা গেছে, তার পিঠে লাগা গুলি বুক ভেদ করে বেরিয়ে গেছে।

গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় সিদ্দিক (৪০), বিল্লাল হোসেন (২০) এবং মইনুল ইসলাম আকাশ (২৪) নামে অপর তিন যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে তারা বলেছেন, তাদের কেউই পরিবহন শ্রমিক নন এবং বিক্ষোভে জড়িত ছিলেন না।

অপরদিকে ট্রাকচালক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, বিক্ষোভের সময় কয়েকশ পুলিশের সঙ্গে মিলে সেতুর ইজারাদারের লোকজনও তাদের ওপর চড়াও হয়।

toll hike

এর আগে, টোলমুক্তির দাবিতে সকাল ৬টা থেকে সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত অবরোধ করে রাখে হাজার সংখ্যক চালক-শ্রমিক। এতে সড়কের দুই পাশে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ৮টার দিকে লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত বিল্লাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘ওইদিন সকাল ১০টার দিকে ইকুরিয়ার কর্মস্থল থেকে হাসনাবাদের মোকামপাড়ার বাড়িতে ফিরছিলাম। কিন্তু হাসনাবাদে এসে দেখি অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন পুলিশ সদস্য গুলি এবং আরও অনেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে। ভয়ে একটি গলি ধরে দৌড়াতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পাঁজরে লাগে এবং আমি লুটিয়ে পড়ি।’’

সোহেলের মৃত্যুর ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শফিউর রহমান ঘটনাস্থল থেকে বলেন, ‘‘পুলিশের গুলিতে সোহেল মারা যায়নি। কারণ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ কেবল ফাঁকা জায়গায় গুলি ছুড়েছে।’’ ঘটনাটি নিয়ে পরবর্তীতে তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

তবে অন্তত এক ডজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ‘‘পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয় সোহেলের।’’

পুলিশের উপস্থিতিতেই ইজারাদারদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম।

toll hike

অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার খোরশেদ আলম বলেছেন, ‘‘ওই সময় তার পক্ষের কোনো লোক ঘটনাস্থলে ছিল না।’’

উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কাছ থেকে ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকার বিনিময়ে সেতুটির নতুন ইজারাদারের দায়িত্ব নেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

5h ago