রিয়ালকে উড়িয়ে দিল বার্সেলোনা
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/000_1ae17o.jpg?itok=qtTMvl0x×tamp=1540746626)
দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি নেই। কিন্তু তাতে কি? তার অভাব বিন্দু মাত্র বুঝতে দেননি লুইস সুয়ারেজ, ফিলিপ কৌতিনহোরা। উল্টো মেসির অভাবেই যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠল দলটি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করে ছেড়েছে। দারুণ এক হ্যাটট্রিক করেছেন সুয়ারেজ। ফলে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েই চলতি মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো শেষ করল কাতালান ক্লাবটি।
নতুন কোচ জুলেন লোপেতগির অধীনে চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই বাজে সময় পার করছে রিয়াল। শেষ পাঁচ ম্যাচে জয়হীন ছিল দলটি। যার মধ্যে ছিল চারটি হার। রোববার ন্যু ক্যাম্পের সময়টা কাটল দুঃস্বপ্নের মতো। ছন্নছাড়া দলটিকে নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছে বার্সেলোনা। রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তুয়া ত্রাতা না হলে কিংবা বারপোস্ট প্রতিপক্ষ না হলে ব্যবধানটা হতে পারতো আরও বড়।
বাজে ডিফেন্সে পাঁচ গোল হজম করলেও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর অভাবটা ভালো ভাবেই টের পেয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ মিস করেছেন করিম বেনজেমা। টিভি ধারাভাষ্যকার তখন আফসোস করেই বলে উঠলেন। এই হেডটা যদি রোনালদো নিত তাহলে ম্যাচের ফলাফল এখন ২-২ গোলে সমতায় থাকতো। আর তা হলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন কিছুও হতে পারতো। হয়নি। তবে ভাগ্যও ছিল না রিয়ালের। না হলে ফাঁকায় থেকে লুকা মদ্রিচের নেওয়া শট কেনই বা বারে লেগে ফিরে আসবে।
পুরো ম্যাচেই ছিল বার্সেলোনার দাপট। তবে গোল করার মতো প্রথম আক্রমণটা করেছিল রিয়ালই। ৮ মিনিটে বেনজেমার শট লক্ষ্যে থাকেনি। তিন মিনিট পরই ব্রাজিলিয়ান তারকা ফিলিপ কৌতিনহোর গোলে এগিয়ে যায় দলটি। তবে দারুণ এ গোলে অবদানটা বেশি জর্দি আলবার। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডিবক্সে ঢুকে দেখে শুনে ক্রস করেন কৌতিনহোকে। আর বল ধরে তা লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোন ভুল করেননি এ ব্রাজিলিয়ান।
ম্যাচের ১৯ মিনিটেই দ্বিগুণ হতে পারতো ব্যবধান। আর্থার মেলোর দূরপাল্লার শট দুর্দান্ত দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কর্তোয়া। তবে ম্যাচের ৩০ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সেলোনা। ডিবক্সের মধ্যে তাকে পেছন থেকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় দলটি। তবে শুরুতে বাঁশি বাজাননি। বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের আবেদনে ভিএআরের সাহায্যে স্পটকিকের নির্দেশ দেন তিনি। আর তা থেকে দারুণ এক শটে গোল আদায় করে নেন সুয়ারেজ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে যেন ভিন্ন এক রিয়াল মাঠে নামে। একের পর এক আক্রমণ সানিয়ে ৫০ মিনিটে ব্যবধান কমায় দলটি। ইসকোর ক্রস এক বার্সেলোনা খেলোয়াড়ের পা লেগে চলে আসে মার্সেলোর কাছে। বল পেয়ে জোরালো শটে জাল খুঁজে নেন এ ব্রাজিলিয়ান। গোল দিয়ে আরও তেতে ওঠে দলটি। ৫৬ মিনিটে প্রায় গোল পেয়ে যাচ্ছিল দলটি। মদ্রিচের শট বারে লেগে ফিরে আসে।
পাঁচ মিনিট পর বারপোস্ট হতাশ করে বার্সেলোনাকেও। সের্জিও রোবার্তোর ক্রসে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ৬৭ মিনিটে নিজেদের সবচেয়ে সহজটি পেয়েছিল রিয়াল। বেলের ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে হেড করেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বেনজেমা। তাতেই হতাশা বাড়ে দলটির, মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ আবার হারায়।
৭৫ মিনিটে আবারও ব্যবধান বাড়ায় বার্সেলোনা। সের্জিও রোবার্তোর ক্রসে দারুণ এক হেড দিক বদলে দিয়ে জাল খুঁজে নেন সুয়ারেজ। এ গোলে যেন বার্সেলোনা আরও জেগে ওঠে। মুহুর্মুহু আক্রমণে তখন দিশেহারা অবস্থা রিয়ালের। আর এ অবস্থায় বড় ভুল করে বসেন রিয়াল অধিনায়ক। ৮৩ মিনিটে বল ধরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় পেয়ে যান বার্সেলোনার রোবার্তো। তার বাড়ানো বল ধরে দারুণ এক ফিনিশিংয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সুয়ারেজ।
চার মিনিট পর বার্সেলোনার গোল উৎসবে যোগ দেন বদলী খেলোয়াড় ভিদালও। তবে এ গোলে দারুণ অবদান আরেক বদলী খেলোয়াড় ওসমান দেম্বেলের। দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিখুঁত এক ক্রস করেন ভিদালের উদ্দেশ্যে। লাফিয়ে ওঠে দারুণ হেড বল জালে জড়িয়ে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন চিলির এ মিডফিল্ডার।
Comments