আরও ৪ নতুন ব্যাংক!
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের চাপে অবশেষে নতুন চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংককে লাইসেন্স দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ (২৯ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
নতুন এই চার ব্যাংক অনুমোদন পেলে, বাংলাদেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২-তে। প্রস্তাবিত চার ব্যাংক হচ্ছে: কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ, বেঙ্গল ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক এবং সিটিজেন ব্যাংক।
পুলিশের উদ্যোগে ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ’ চালু করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট (বিপিডব্লিউটি)। অপর তিন ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সখ্যতা রয়েছে।
‘বেঙ্গল ব্যাংক’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে দেশিয় প্লাস্টিক পণ্য প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। আওয়ামী লীগের সাংসদ মোর্শেদ আলম এই গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রস্তাবিত ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হলেন তার ছোট ভাই জসীম উদ্দিন।
প্রস্তাবিত ‘পিপলস ব্যাংক’ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এমএ কাশেম। এছাড়াও, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক ‘সিটিজেন ব্যাংক’র চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন।
গত বছর অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে চাপ আসা সত্ত্বেও নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার প্রস্তাবটি স্থগিত রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষজ্ঞরা এখনও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে বলছেন, ‘‘এই সেক্টরটি এমনিতেই মাত্রাতিরিক্ত শোষণের শিকার। সামগ্রিকভাবে এর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। সম্প্রতি, নতুন ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ।’’
কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ক্রমাগত আসতে থাকা চাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিরোধ আর বেশি দীর্ঘায়ত হয়নি। অর্থমন্ত্রী সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বরও এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া এক চিঠিতে মুহিত লিখেন, ‘‘সম্ভবত, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রস্তাবিত একটি ব্যাংককে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আপনাকে প্রস্তাবিত সবগুলো ব্যাংককে একে একে লাইসেন্স দেওয়ার অনুরোধ করছি।’’
চিঠিতে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি এক বৈঠকে প্রস্তাবিত ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স প্রদানে সম্মত হয়েছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা, যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও উপস্থিত ছিলেন।’’
তবে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “দেশের ব্যাংক খাত খুব বেশি বড় হয়ে গেছে। আর্থিক খাতের চাহিদার তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি বলে ব্যাংকাররাই মনে করছেন। তাই এ খাত সংকোচনের দরকার হতে পারে।”
Comments