প্রথম দিনটা কারো নয়
শুরুটা জুতসই, মাঝখানে ছন্দপতন, শেষটা আরও আলো ঝলমলে হতে পারত জিম্বাবুয়ের। সে পথেই এগুচ্ছিল তাদের ইনিংস। তবে সেঞ্চুরির পথে থাকা শেন উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দিনটা জিম্বাবুয়ের হতে দিলেন না মাহমুদউল্লাহ।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশ কিংবা জিম্বাবুয়ে, কাউকেই এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই। ২৩৬ রান তুলে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। তবে বাংলাদেশও তো ফেলে দিয়েছে ৫ উইকেট।
উইকেট সময়ের সঙেই ভাঙবে। টসটা ছিল তাই মহাগুরুত্বপূর্ণ। সিরিজে প্রথমবারের মতো টস ভাগ্য গিয়েছে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার পক্ষে। ব্যাটিং নিতে কোন ভুল করেননি তিনি। দিনের পুরো খেলার ছবিও বলছে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক নিয়েছিলেন সঠিক সিদ্ধান্তই। মাঝে মাঝে কিছু বল লাফিয়েছে, ঘুরেছেও বটে। তবে প্রথম দিন খুব বিষাক্ত হয়নি ব্যাটসম্যানদের খেলা। বরং আরেকটু নিবেদন থাকলে অন্তত দুই উইকেট কম হারাতে পারত জিম্ববুয়ে।
হেমন্তে দিনের ব্যপ্তী ছোট হয়ে আসে। এই সিরিজে খেলা আরম্ব হওয়ার সময় প্রথমে সাড়ে নটা থাকলেও পরে সেটা বদলে করা হয় সকাল ১০টা। দিনের শেষ দিকে তাই জ্বালাতে হলো ফ্লাডলাইট। শেষের আধঘন্টা কৃত্তিম আলোতেই ব্যাট করতে হয়েছে সফরকারীদের। তবে এই সময়ে খুব বেশি বিপদে পড়েনি তারা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উইকেট টার্নিং হবে, এটা জানা কথাই। এই উইকেটে এক পেসার নিয়েও নামতে পারে বাংলাদেশ, এমন ইঙ্গিতও আগের দিন দিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেটাই হলো। আবু জায়েদ রাহি এবং আরও তিন স্পিনার নিয়ে নেমে পড়ল বাংলাদেশ। টেস্টের দ্বিতীয় ওভারেই তাই বল করতে এলেন তাইজুল ইসলাম।
পুরো ৯০ ওভারের মধ্যে পেসাররা বোলিং করেছেন ২২ ওভার। এরমধ্যে রাহি ১৮ ওভার , অভিষিক্ত পেস অলরাউন্ডার আরিফুল হক কেবল চার ওভার। বাকি সবই স্পিনারদের দখলে। স্পিনারদের মধ্যে সেরা তাইজুলই। সবচেয়ে বেশি ২৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ভালো শুরু পাওয়ার খানিক পর ওই তাইজুলেই কুপোকাত জিম্বাবুয়ে। ব্রায়ান চারি দারুণ দুই বাউন্ডারিতে দিচ্ছিলেন ভাল কিছুর ইঙ্গিত। প্রথমে তার উইকেট গেল কুৎসিত এক শটে। হুট করে টি-টোয়েন্টি মেজাজের স্লগ সুইপ করতে গেলে হয়েছেন বোল্ড।
ওয়ানডের ছন্দটা ধরে রাখতে পারেননি ব্র্যান্ডন টেইলর। তাইজুলকে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রান করে। টিকে ছিলেন অধিনায়ক মাসাকাদজা। অনেকদিন পর টেস্টে ফেরা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দিচ্ছিলেন আস্থা। লাঞ্চের পর পরই লোকাল বয় আবু জায়েদ রাহির ভেতরে ঢুকা বলে ফিফটি পেরিয়েই থামেন তিনি।
উইলিয়ামসের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটির পর নাজমুল ইসলাম অপু সোজা বলে বোল্ড হন সিকান্দার রাজা। উইলিয়ামস যেভাবে খেলছিলেন সেঞ্চুরিটা মনে হচ্ছিল পেয়েই যাচ্ছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ভীষণ সফল উইলিয়ামস। কিন্তু এর আগে কখনো ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ এর বিপক্ষে টেস্টে নামা হয়নি তার। প্রথমবার নেমেই ওয়ানডের ছন্দ দেখালেন তিনি।
১৭৩ বলে ৯ চারে ৮৮ রান করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আচমকা লাফানো বলে ফেরেন উইলিয়ামস। শেষ বিকেলে আর কোন বিপর্যয়ে পড়েনি জিম্বাবুয়ে। রেজিস চাকাভাকে নিয়ে স্বস্তিতেই দিন পার করেছেন পিটার মুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রথম দিন শেষে
জিম্বাবুয়ে: ২৩৬/৫ (৯১)( মাসাকাদজা ৫২ , চারি ১৩, টেইলর ৬, উইলিয়ামস ৮৮, রাজা ১৯, মুর ব্যাটিং ৩৭*, চাকাবা ব্যাটিং ২০* ; জায়েদ ১/৬১, তাইজুল ২/৮৬, আরিফুল ০/৭, মিরাজ ০/৩৭, নাজমুল ১/৪২, মাহমুদউল্লাহ ১/২ )
Comments