তবু মুমিনুল, শান্তদের উপরই আস্থা রোডসের
মুমিনুল হককে নিয়ে নেটে গিয়ে ফুটওয়ার্ক দেখাচ্ছিলেন প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। কীভাবে শরীর বলের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন তা। আগের দিন কাইল জার্ভিসের বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন। ভুলটা কোথায় হয়েছিল, তা বোঝাতেই হয়ত ক্লাস চলল অনেকক্ষণ। একদিন আগে টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার সিলেট টেস্টের ‘পঞ্চম দিন’ পরিণত হলো এমন ঐচ্ছিক অনুশীলনে।
গ্যালারিতে মানুষ নেই, গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিড়ভাট্টা নেই। দলের বেশিরভাগই চলে গেছেন ঢাকায়। যারা রয়ে গেছেন তাদের নিয়ে সকালে মাঠে এলেন তিন কোচ। সিলেট টেস্টের একাদশে যারা ছিলেন তাদের দেওয়া হয়েছিল ছুটি। ছুটি পেয়ে সকালেই ফ্লাইট ধরে ঢাকা চলে গেছেন মুশফিকু রহিম, মাহমুদউল্লাহরা।
মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত আগের দিন খেলেও এদিন অনুশীলনে এলেন নিজের তাড়না থেকেই। এক পাশে মোস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, খালেদ আহমেদদের নিয়ে কাজ করেছেন কোর্টনি ওয়ালশ। তখন মুমিনুল, শান্তদের নিয়ে ব্যস্ত দেখা গেল রোডসকে।
জিম্বাবুয়ের কাছে সাড়ে তিন দিনে ১৫১ রানের বিশাল হারের পর দেশের ক্রিকেটে বড় ঝাঁকুনি লেগেছে। ব্যাটসম্যানদের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসার মিছিলের পর প্রশ্ন উঠেছে দল নির্বাচন নিয়েও।
জাতীয় লিগের কয়েক মৌসুম থেকেই রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া তুষার ইমরানের নাম এসেছে সবার আগে। এই মৌসুমেও রান সংগ্রহে তিনি আছেন দুই নম্বরে। কোচের কাছেও গেল এই প্রশ্ন। টেস্টে তরুণদের ব্যর্থতার সময়ে এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে কি সুযোগ দেওয়া যায় না?
তুষার যেখানে রান করেছেন, সেই জাতীয় লিগের উদাহরণ টেনেই রোডস এগিয়ে রাখলেন শান্তদেরই, ‘জাতীয় দলের যারা জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলেছে তাদের মধ্যে শান্ত ১৮০ করেছে, লিটন দুশো করেছে, মুমিনুল সেঞ্চুরি করেছে, আরিফুল ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। কাজেই তারাই অনেক রান করেছে। যাদের কথা বললেন (তুষার ইমরান) তাদের চেয়ে বেশি রান করেছে। তারাই এই মুহূর্তে সেরা খেলোয়াড়। আমি মনে করি সাকিব, তামিম না থাকলে এদের উপরই আমাদের ভরসা করতে হবে।’
সর্বশেষ আট টেস্ট ইনিংসেও বাংলাদেশ করতে পারেনি দুশো রান। তবু কোচের চোখে এটা কেবলই আরেকটি খারাপ দিন, ‘সবারই খারাপ দিন যায়। আপনারা কাজ করেন আপনাদেরও খারাপ দিন আসে। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা নিয়ে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি।‘
তীব্র সমালোচনা চলছে চারপাশে, ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও বলছেন এভাবে টেস্ট খেলার মানে নাই। তবু এই দুঃসময় থেকে নিজেদের বৈশিষ্ট্যেই ফিরে আসবে বাংলাদেশ, এমন বিশ্বাস কোচের, ‘ছেলেরা ভুল শোধরাতে মুখিয়ে আছে। বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে আমি যেটা উপভোগ করি তা হচ্ছে দারুণভাবে ফিরে আসার মানসিকতা। খুব খারাপ অবস্থা থেকেও ফিরে আসার শক্তি রাখে সবাই। পরের টেস্টেই তাই ফিরে আসবে সবাই।’
Comments